খালেদাকে দেশ গড়ার কারিগর বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে যশোরের মণিরামপুরে আ.লীগ নেতা আব্দুল
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশ গড়ার কারিগর বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাই। তিনি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক।
শুক্রবার (২৫ মার্চ-২০২২) বিকেলে মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত ২৫ মার্চ ভয়াল গণহত্যা স্মরণে ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তিতাকালে আব্দুল হাই এ কথা বলেন।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আব্দুল হাই তার বক্তব্যে বলেন- সংগ্রামী সাথীরা আমার, আপনারা জানেন, ২৬ মার্চ পাকিস্থানীরা সে দিন বাংলাদেশের মানুষকে গণহারে হত্যা করেছিলো। তারপর বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব পেয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপ দিয়েছেন। আজকে বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে দেখুন, দেশ গড়ার কারিগর উন্নয়নের কারিগর দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া। একথা মনে রেখে আগামী নির্বাচনে।
আব্দুল হাইয়ের এ বক্তব্যের পর সভার স্থান থেকে একজন দেশনেত্রী শেখ হাসিনা বলে ওঠেন। তখন তিনি কথা ফিরিয়ে দেশ নেত্রী শেখ হাসিনা বলে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন, নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হুসাইন, জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম মিলন, তপন বিশ্বাস পবন, সন্দ্বীপ ঘোষ প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আব্দুল হাইয়ের ভিডিও বক্তব্য শনিবার (২৬ মার্চ-২০২২) দুপুরে এসকে আব্দুল লতিফ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে।
এমডি রাশেদ আলী মন্তব্য করেন, আব্দুল হাইকে দল থেকে বহিস্কার করা হোক।
এসকে রাশিদা লতিফ মন্তব্য করেন, হাই আল্লাহ! একি অবস্থা। ১১ নাম্বার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের যুগ্ম আহবায়ক আবদুল হাই একি বক্তব্য রাখলেন। আবারো তিনি নিজেই প্রমাণ করে দিলেন তিনি আওয়ামী লীগের কেউ না। সে একজন হাইব্রিড নেতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শনিবার (২৬ মার্চ-২০২২) দুপুরে আব্দুল হাই বলেন- বলা পড়িনি মনে হয়। আমি না বলবো না। মিসটেক হতে পারে। শেখ হাসিনার নাম বলতে যেয়ে খালেদার নাম বলা পড়ে যেতে পারে। আমি তো মানুষ, ভুল তো হতে পারে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন বলেন- আব্দুল হাই দেশগড়ার কারিগর খালেদা জিয়া বলারপর আমি শেখ হাসিনার নাম বলে উঠি। তখন তিনি দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নাম উচ্চারণ করেন। এটা আপত্তিকর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন- আমি একটা প্রোগ্রামে আছি। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে পারবো না।
এদিকে জানা গেছে- আব্দুল হাই আগে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি যুবদল ও বিএনপির সংগঠন করে দলীয় কোন্দলের কারণে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগে চলে আসেন। এরপর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদও ভাগিয়ে নেন।
চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক (১) জেলা পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন- শুক্রবারের মণিরামপুরের আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। আব্দুল হাই তার বক্তব্যে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বলে ফেলেছেন। ইউনিয়নেও বহুবার একারণে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।
মিলন বলেন- যুবদল ও বিএনপি করার পর থানার এক নেতার সাথে কোন্দলের কারণে দল বাদ দেন আব্দুল হাই। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে আসেন। ২০১৫ সালে গঠিত চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে তার নাম রাখা হয়। পরে উপজেলায় যোগাযোগ করে যুগ্ম আহবায়ক (৩) পদে ঢুকে পড়েন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন