খাশোগি হত্যার দায় স্বীকার করছে সৌদি!
অবশেষে রাজতন্ত্রবিরোধী সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার দায় স্বীকার করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। খাগোশিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে দেশে নিয়ে আসার বিষয়টি সৌদি সরকার অনুমোদন করছিল। তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করে। প্রচণ্ড চাপের মুখে সৌদি কর্তৃপক্ষ খাগোশি হত্যার আনুষ্ঠানিক দায় স্বীকার করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা আটক করে দেশে নিয়ে আসার বিষয়টির অনুমোদন করেন। কিন্তু গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ‘ভুলবশত’ তাকে হত্যা করেন। পরে ওই কর্মকর্তা নিজেকে বাঁচানোর জন্য বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
এদিকে তুরস্ক বলছে, জামাল খাশোগি গত সপ্তাহে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কন্স্যুলেটে প্রবেশের পর আর বের হননি। গত সপ্তাহে তুরস্কে আসা ১৫ সদস্যের একটি সৌদি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আঙ্কারার।
এমন দাবি অস্বীকার করে আসছিল সৌদি আরব। সৌদির ভাষ্য, খাশোগি কন্সুল্যেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে এর প্রমাণ চাওয়া হলে তা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে রিয়াদ।
সৌদি আরবের রাজতন্ত্রবিরোধী সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার পেছনে ‘খুনি দুর্বৃত্তদের’ হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সৌদি বাদশা সালমানের সঙ্গে টেলিফোন সংলাপের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে খাশোগির সম্ভাব্য হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে সৌদি রাজাকে মুক্ত করে দেয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
তারা বলছেন, রিয়াদের কাছে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ট্রাম্প এই কৌশলের আশ্রয় নিলেন।
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করছে, সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনাকারীরা দেশের বাইরেও নিরাপদ নন।
সৌদি রাজতন্ত্রের ঘোর বিরোধিতাকারী খাশোগি ২০১৭ সাল থেকে আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন। সরকারবিরোধীদের বিরুদ্ধে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
খাশোগি এক সময় সৌদি সরকারের উপদেষ্টা থাকলেও এক পর্যায়ে সরকারের নানা কাজের সমালোচনা করা শুরু করেন। ২০১৭ সাল থেকে তিনি আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে চলে যান। সেখানে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট হিসেবে কাজ করতেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন