খেলাপি ঋণ ৬৫ হাজার কোটি টাকা
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে বিগত ১০ বছরে ১০ কোটির অধিক পরিমাণ ব্যাংক ঋণ দেয়া হয়েছে। এসব ঋণ নিয়েছে ৮ হাজার ৭৯১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ লাখ ৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৬৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকা আদায় সম্ভব হয়নি। গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি ডাটাবেজে রক্ষিত ঋণ তথ্যর ভিত্তিতে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জানান। একইসঙ্গে ১ হাজার ৯৫৬ শীর্ষ ঋণ খেলাপির নাম সম্বলিত তালিকা সংসদে প্রকাশ করেন।
বুধবার জাতীয় সংসদে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
একইসঙ্গে তিনি বেসিক, সোনালী, ফারমার্সসহ বিভিন্ন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যাংকের ব্যাপারে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো বর্ণনা করেন। এ সময় তিনি সংসদে জানান, বর্তমান সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের অর্থপাচারের ঘটনা ভোলেনি।
খেলাপি ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা
অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্যমতে, ১০ কোটির ওপরে ঋণ নেয়া খেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকায় প্রথম ২০টির মধ্যে রয়েছে, মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স (প্রা.) লি., মেরিন ভেজিটেবল অয়েল লি., কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম লি., ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লি., আনোয়ারা স্পিনিং মিলস, চৌধুরী নিটওয়ারস লি., সিদ্দিক ট্রেডার্স, ইয়াসির এন্টার প্রাইজ, আলাপ্পা কম্পোজিট টাওয়ালস লি., লিজেন্ড হোল্ডিংস, হলমার্ক ফ্যাশন লি., মুন্নু ফেব্রিক্স লি., ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিক্স লি., শাহারিশ কম্পোজিট টাওয়ালস লি., কেয়া ইয়ার্ন শিলস লি., সালেহ কার্পেট মিলস লি., ফেয়ার ইয়ার্ন প্রোসেসিং লি., হেল্পিং রিসোর্স লি., বিসমিল্লাহ টাওয়ালস লি.।
একই প্রশ্নের জবাবে মুহিত জানান, শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ৭২ হাজার ৫০ কোটি টাকা বলেও উল্লেখ করেন। অর্থমন্ত্রী তার জবাবে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া ৯১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঋণের পরিমাণ, ঋণ গ্রহীতা ৮ হাজার ৭৯১টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়নি এমন এক হাজার ৯৫৬ জন খেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামও উল্লেখ করেন।
এতো সহজে উত্তরণ হবে না: সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ঋণ খেলাপি বা অনিয়মে জড়িতদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন। অনেকে জেলে আছেন। অনেকের বিচার চলছে। তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমি কয়েক দিন আগেও সংসদে বলেছি- ব্যাংক ব্যবস্থায় এখনো কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি। তবে এতো সহজে উত্তরণ হবে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের চেষ্টা চলছে। তবে একটু সময় লাগবে।
আরেক সংসদ সদস্য ফজিলাতুননেসা বাপ্পি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তাদের সহযোগীরা বহু অনাচার করে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে সব সময়ই মামলাগুলো প্রলম্বিত করার একটা চেষ্টা চলে। আর আমাদের আইন ব্যবস্থা সহজ বিধায় তা সম্ভবও হয়। তবে সরকার তাদের দুর্নীতি-অর্থপাচারের কথা ভোলেনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন