গবেষণা বলছে মানুষের ঢাকা ত্যাগ করোনা বিস্তারের কারণ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2021/09/Untitled-1-20210914153438-1.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
গত ২৩ থেকে ২৬ মার্চ মানুষের ঢাকা ত্যাগকে দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ হিসেবে দেখছে দেশি-বিদেশি সাতটি প্রতিষ্ঠান। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআর,বি ও দেশি-বিদেশি এসব প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে তৈরি গবেষণাপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তাররোধে সরকার গত বছর প্রথম দফায় যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল, ওই সময় মানুষের ঢাকা ছাড়ার হিড়িকই দেশব্যাপী এ মহামারির বিস্তার ঘটায় বলে গবেষণায় বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর,বি, আইদেশি, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম, যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্যাঙ্গার জিনোমিক ইনস্টিটিউট, হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং ইউনিভার্সিটি অব বাথের বিজ্ঞানীদের যৌথ উদ্যোগে একটি জিনোমিক কনসোর্টিয়ামের আওতায় ২০২০ সালের মার্চ মাসে এ গবেষণাটি শুরু হয়।
গবেষণায় বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের উদ্ভব, দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারে লকডাউনের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে জনসাধারণের চলাচলের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিকভাবে ২০২০ সালের মার্চ-জুলাই অন্তর্বর্তীকালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত ৩৯১টি করোনাভাইরাসের জিনোম বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য উদ্ভব ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় এবং পরে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে আরও ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটে। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর বিস্তাররোধে ২৩ মার্চ বাংলাদেশ সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম থেকে সংগৃহীত ফেসবুক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী এ অন্তর্বর্তীকালীন ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে জনসাধারণের ঢাকা ত্যাগ করার প্রাপ্ত ডাটার সঙ্গে সার্স-কোভ-২ জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২৩ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে ঢাকা বহির্মুখী যাতায়াতই মূলত দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ।
পরে কনসোর্টিয়াম নভেম্বর ২০২০ থেকে এপ্রিল ২০২১ এর মধ্যে সংগৃহীত আরও ৮৫টি সার্স-কোভ-২ নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৩০টি ছিল লিনিয়েজ বি.১.১.২৫ (৩৫%), ১৩টি ছিল আলফা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.১.৭, ১৫ শতাংশ), ৪০টি ছিল বিটা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৩৫১,৪৭ শতাংশ), একটি ছিল লিনিয়েজ বি.১.১.৩১৫, এবং একটি ছিল লিনিয়েজ বি.১.৫২৫। প্রথম ঢেউয়ে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভাইরাসের বিস্তাররোধে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যেমন- এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘আমাদের এই কনসোর্টিয়াম বিভিন্ন সময় নীতিনির্ধারকদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সহায়তা করে। এর মধ্যে রয়েছে- সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করা, পরিবহন এবং যানবাহন চলাচলে সীমাবদ্ধতা আনা, বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন এবং যেসব দেশে উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট ছিল সেখান থেকে আগত ভ্রমণকারীদের সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা রাখা, সময়মতো লকডাউনের সিদ্ধান্ত বা প্রয়োজনবোধে আন্তর্জাতিক চলাচল সীমাবদ্ধ করা।
আমাদের এ কনসোর্টিয়াাম গত বছরের মার্চ মাস থেকে একত্রে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের এই কাজ চলমান এবং এর মাধ্যমে আমরা আমাদের নীতিনির্ধারকদের জন্য কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে প্রয়োজনীয় প্রমাণভিত্তিক তথ্য সরবরাহ করতে পারবো।’
গবেষণাপত্রের মূল লেখকদের একজন ডক্টর লরেন কাউলি বলেন, ‘জেনোমিক এবং মবিলিটি ঢাকা থেকে বিভিন্ন ডাটা স্ট্রিম একত্রিত করে আমরা কীভাবে করোনাভাইরাস বাংলাদেশের ছড়িয়ে পড়েছিল তা বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ গবেষণাটিতে মহামারি প্রতিরোধে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য মহামারির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।’
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন