গর্ভবতী গাভীর মৃত্যুদণ্ড!
গর্ভবতী গাভীর মৃত্যুদণ্ড! কথা শুনে বেশির ভাগ মানুষ হয়ত চমকে যাবেন। হ্যাঁ চমকে যাবার মতোই ঘটনা হলেও সত্য। আরো চমকে যাওয়ার মতো বিষয় হলো- যে কারণে গর্ভবতী গাভীটির মৃত্যুদণ্ড হচ্ছে। কারণটি হলো- মালিকের দেশের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশে ঢুকে পড়ায় পেনকা নামে ওই গর্ভবতী গাভীটির মৃতদণ্ড চাওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মালিকের দেশের সীমানা অতিক্রম করে অন্য দেশে ঢুকে পড়ায় গাভীটির মৃতদণ্ড চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
যে গাভীটির আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা দেয়ার কথা রয়েছে, তা এখন অনিশ্চিত। তবে কি অবলা প্রাণীটি তার নিজের অনাগতকে দেখতে পারবে না?
পেনকার মালিক বুলগেরিয়ার নাগরিক। আর পেনকা ভুল করে সীমান্ত অতিক্রম করে চলে গিয়েছিল সার্বিয়ায়। কিন্তু সার্বিয়া ইইউভুক্ত দেশ নয়।
যদিও গাভীটি তার মালিকের কাছে ফিরে এসেছিল। সার্বিয়ার পশু চিকিৎসকরা বলছেন, গাভীটি বেশ সুস্থ। তবে বুলগেরিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কড়াকড়ি আইনের কারণে গরুটিকে অবশ্যই মেরে ফেলতে হবে।
লিয়োবোমির লিয়োবোমরিবভ নামের একজন অভিজ্ঞ পশু ডাক্তার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেয়ার কেউ না। আমরা শুধু সেই আইনই প্রয়োগ করে থাকি, যা ব্রাসেলস থেকে আসে।
দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, জন ফ্লেক নামের একজন রক্ষণশীল ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বোইকো বরিসভ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট অন্টনিও তাজানিকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে পেনকার মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, নিশ্চয়ই এটি এমন একটি ঘটনা যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কড়াকড়ি আইনের বাস্তবধর্মী প্রয়োগ হওয়া উচিত।
ইইউ’র নীতিমালায় বলা হয়েছে, সীমান্তের চেক পয়েন্টে গরু নিয়ে ইইউভুক্ত অন্য দেশে প্রবেশের সময় অবশ্যই কাগজপত্র সঙ্গে আনতে হবে; যাতে গরুগুলোর সত্যতা যাচাই করা যায় এবং বোঝা যায় গরুগুলো সুস্থ।
নীতিমালায় আরো বলা হয়, এসব দেশে প্রবেশের সময় অনুমোদিত নির্দিষ্ট চেক পোস্ট দিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে তারপরই কেবল প্রবেশ করা যাবে। তবে পেনকা মামলায় ইইউ’র এসব বিধি-নিষেধ শিথিল করার পক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে। এ বিষয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘চেঞ্জ ডট ওআরজি’তে অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।
আবেদনকারী বলছেন, আমরা বিশ্বাস করি, পেনকা মামলাটি, পেনকার মালিকের মতো অসংখ্য মানুষের উপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আমলাদের সমবেদনার ঘাটতির প্রতিফলন। ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা আড়াই হাজারের মধ্যে এক হাজার ৮০০ জন ব্যক্তি ওই পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে। সূত্র: এএফপি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন