গাড়ি কোথায় ভুলে গিয়েছিলেন, ২০ বছর পর খুঁজে দিল পুলিশ!
এ যেন সেই রিপভ্যানের গল্প, যার ঘুম ভাঙে ২০ বছর পর। তবে জার্মানির এ ঘটনা কোনো গল্প নয়, একেবারে বাস্তব ঘটনা।
এক ব্যক্তি তার গাড়ি কোথায় পার্ক করেছেন তা ভুলেই গিয়েছিলেন।
১৯৯৭ সালে ঘটে ঘটনাটি। ঘটনাস্থল জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহর। হয়তো গাড়ির মালিক অগসবার্গার অ্যালগেমেইন একটু ভুলোমনের। আর গাড়িটি চালিয়ে কোথায় নিয়ে রেখেছেন তা একেবারেই বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন।
এরপর তিনি ভেবেছিলেন গাড়িটি হয়তো চুরি হয়ে গিয়েছে। ফলে পুলিশে গিয়ে রিপোর্টও করে দেন যে, তার গাড়িটি পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ঘটনা অনেকেরই রিপভ্যানের কথা মনে করিয়ে দেয়। রিপভ্যান ছিলেন একজন অলস প্রকৃতির লোক।
বাস করতেন হাডসন নদীর তীরে ক্যাটসকিল পাহাড়ের পাদদেশে ছোট একটি গ্রামে। গ্রামের সবাই তাকে খুব ভালোবাসত। তবে বনে বনে ঘুরে বেড়াতেই সে পছন্দ করত। বনে বনে সে কাঠবেড়ালি আর কবুতর ধরার জন্য একটা ফাঁদ কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াত। এ জন্য তাকে প্রায়ই তার স্ত্রীর চোখরাঙানি সহ্য করতে হতো। একদিন স্ত্রীর বকুনি থেকে বাঁচার জন্য সে তার পোষা কুকুর উলফ আর বন্দুকটা নিয়ে চলে গেল ক্যাটসকিল পাহাড়ের একপ্রান্তে। সেখানে সে একদল অচেনা অদ্ভুত লোকের দেখা পায়। তাদের পরিবেশিত মদ পান করে রিপভ্যান ঘুমিয়ে পড়ে। সেই ঘুম ভাঙে তার ২০ বছর পর। যদিও রিপের কাছে তা মনে হয়েছিল মাত্র একটা রাত্রি। এত বছর পর রিপ তার গ্রামে ফিরে এসে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করে। গ্রামের বুড়োরা ছাড়া তরুণদের কেউই তাকে চিনতে পারে না।
দীর্ঘ ২০ বছর পর হারানো গাড়ি ফেরত পেয়ে তার যেন ঠিক রিপভ্যানের মতোই অনুভূতি হচ্ছিল। স্থানীয় পুলিশও তার গাড়িটি ফেরত দিতে পেরে আনন্দিত। তা যত বছর পরই হোক না কেন!
গাড়িটি তিনি চালিয়ে নিয়ে একটি পুরনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভবনের গ্যারেজে রেখেছিলেন। সে ভবনটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার পর এবার ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময়ই গাড়িটির দেখা পায় কর্তৃপক্ষ। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। জার্মান পুলিশ নথিপত্র ঘেঁটে মালিককে ঠিকই বের করে ফেলে।
বর্তমানে এর মালিক ৭৬ বছরের বৃদ্ধ। পুলিশের কাছে খবর পেয়ে তার মেয়ে গাড়ি চালিয়ে তাকে গাড়িটির কাছে নিয়ে যান।
দুর্ভাগ্যবশত গাড়িটি পাওয়া গেলেও তা এখন আর ব্যবহার উপযোগী নেই। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাড়িটি এখন ভেঙে ফেলার জন্য স্ক্র্যাপইয়ার্ডে পাঠাতে হবে।
জার্মানিতে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। যেখানে এক ব্যক্তি মনে করেছিলেন গাড়িটি পার্ক করেছেন, বাস্তবে তার চেয়ে চার মাইল দূরে তিনি গাড়িটি পার্ক করেছিলেন। সে ঘটনার প্রায় দুই বছর পর গাড়িটি খুঁজে পাওয়া যায়।
সূত্র : দ্য ইনডিপেনডেন্ট
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন