গোপনাঙ্গ ফর্সা করতে ছুটছেন হাসপাতালে!

মানুষ মুখ থেকে শুরু করে হাত-পা ফর্সা করার জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী ব্যবহারের কথা শোনা গেলেও গোপনাঙ্গ ফর্সা করার কথা হয়ত শোনা যায়নি। কিন্তু কথাটা শুনতে অবাক হলেও সত্য! ‘পুরুষাঙ্গ’ ফর্সা করতে হাসপাতালে ছুটছেন থাইল্যান্ডের পুরুষরা! আর এই ব্যতিক্রমী সেবা দিচ্ছে দেশটির লেলাক্স হাসপাতাল।

লেলাক্স হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার পপল টানসাকুল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি’কে জানান, চার মাসে আগে হাসপাতালে প্রথমে থাই নারীদের জননাঙ্গ ফর্সা করা শুরু হয়। কিছুদিন পর দেখা যায়, নারীদের দেখাদেখি দেখে অনেক পুরুষ তাদের পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার জন্য হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে। সেই থেকে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের জন্য এ সেবা চালু করা হয়।

যদিও এশিয়ার দেশগুলোতে গায়ের রঙ ফর্সা করার চেষ্টা নতুন কোনো বিষয় নয়। কিন্তু থাই পুরুষদের পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার সাম্প্রতিক এ হিড়িকে দেশটির ‘বিউটি ইন্ডাস্ট্রি’ সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পপল টানসাকুল আরো জানান, লেজার পদ্ধতিতে এ চিকিৎসা করা হয়। লেজারের মাধ্যমে ত্বকের মেলানিনকে ধ্বংস করে তা ফর্সা করা হয়। তিনি বলেন, ওই সেবার পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করে ক্লিনিক থেকে ফেইসবুকে দেয়া একটি পোস্ট মাত্র দু’দিনেই ১৯ হাজার বার শেয়ার হয়েছে। এছাড়া দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই চিকিৎসা পদ্ধতি।

স্পর্শকাতর এই জায়গায় এ ধরণের চিকিসায় বিপদের ঝুঁকি থাকলেও প্রচেষ্টা থেমে নেই। প্রতি মাসে গড়ে ২০-৩০ জন রোগী এ সেবা নিতে হাসপাতালে আসছেন। শুধু থাই পুরুষই নয়, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার এবং ফিলিপাইন থেকেও অনেকে এই সেবা নিতে ওই হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছে! যৌনাঙ্গের রঙ ফর্সা করতে পাঁচটি সেশনের জন্য খরচ হবে ৬৫০ মার্কিন ডলার।

বিবিসি’র থাই সার্ভিস পুরুষাঙ্গ ফর্সা করা একব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তিনি যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, সুইমিং কস্টিউম পরে সাঁতারে যাওয়ার সময় তিনি আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী বোধ করার জন্যই এটি করেছেন।

পপল জানান, এই চিকিৎসা পদ্ধতি সমকামী এবং ‘ট্রান্সভেস্টাইটেস’ মানুষদের মধ্যেই বেশি জনপ্রিয়। কারণ তারা শরীরের সব অংশকে আকর্ষণীয় রাখতে চায়।

তবে থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পুরুষাঙ্গ ফর্সা করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, এর কোনো প্রয়োজন নেই। এই চিকিৎসা নেয়ার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে রয়েছে, পুরুষাঙ্গ ব্যাথা হওয়া, ফুলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া করা। এছাড়া চিকিৎসা বন্ধ রাখলে বিশ্রী দাগ পড়াসহ আরো অনেক গুরুত্বর সমস্যা দেখা দেয়ার আশঙ্কা আছে।

জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. থোংচাই কিরাটিহুত্যাকর্ণ এক বিবৃতিতে বলেছেন, লেজার পদ্ধতিতে পুরুষাঙ্গ ফর্সা করা কেবল অর্থেরই অপচয়ই নয়, এক্ষেত্রে সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই হয় বেশি।