চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সম্পাদক পদ: চেম্বার আদালতের আদেশ নিপুণ-জায়েদকে মানতে নির্দেশ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থিতাবস্থা দুই পক্ষকে কঠোরভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ সোমবার এ আদেশ দেন।
চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদনটি চার সপ্তাহের জন্য মুলতবি রাখা হয়েছে (স্ট্যান্ড ওভার)। আদালত বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে কেউ চাইলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে পারবেন।
আদেশের পর জায়েদ খানের আইনজীবী আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, চেম্বার জজ যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলেছেন আপিল বিভাগ। স্থিতাবস্থার আগে জায়েদ অফিসে বসেছিলেন। কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। স্থিতাবস্থা কঠোরভাবে ফলো করতে বলা হয়েছে। সুতরাং জায়েদ এই দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।’
তবে নিপুণের আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, নিপুণ সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে (দায়িত্বে) আছেন, থাকবেন।
২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পর দিন প্রাথমিক ফলে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আক্তার। আপিল বোর্ড এ নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর এক চিঠিতে জানায়, আপিল বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন।
এদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও আপিল বোর্ডের ৫ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুলে ২ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে হাইকোর্ট ২ ফেব্রুয়ারির চিঠির কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পাশাপাশি ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারির চিঠি ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। আর রুল শুনানির জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে আদেশের বিরুদ্ধে নিপুণের করা আবেদনের ওপর ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানি হয়। সেদিন চেম্বার বিচারপতি আদেশ দেন। চেম্বার বিচারপতির আদেশে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে নিপুণের আবেদন ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালনে ওই সময়ে দুপক্ষকে (নিপুণ ও জায়েদ) স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ আদেশ চলমান থাকবে উল্লেখ করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ নিপুণের আবেদন নিষ্পত্তি করে ১৪ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ঘোষিত আদেশে আপিল বিভাগ বলেন, দুই পক্ষ (জায়েদ ও নিপুণ) উপস্থাপন করেছে যে হাইকোর্টে বিষয়টি (রুল শুনানি) ১৫ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এ অবস্থায় আবেদনটি (নিপুণের করা) নিষ্পত্তি করা হলো। চেম্বার বিচারপতি যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা চলমান থাকবে।
১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বেঞ্চে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে নিপুণের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত বুধবার থেকে রুলের শুনানি শুরু হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন