চার কারণে ২ টাকার নোট পাচার হচ্ছে ভারত-চীনে
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময় প্রতিবেশি দেশ ভারত ও চীনে দুই টাকার নোট পাচার হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ও গোয়েন্দা বিভাগ দুই টাকার নোট পাচার হওয়ার সময় বেশ কয়েকটি চালান আটক করে।
শনিবার সকালে ভারতে পাচারকালে বেনাপোল চেকপোস্টে ২ টাকার ২৩ হাজার নতুন নোট জব্দ করেছেন বিজিবি সদস্যরা। বেনাপোল চেকপোস্টে আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল থেকে একটি পরিত্যক্ত স্কুলব্যাগ থেকে এসব নোট জব্দ করা হয়।
এর আগে চীনে পাচারের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণে দুই টাকার নোট চীনে পাচারের সময় আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ‘হেলথ কেয়ার সার্ভিস’ বই হিসেবে পাচারের চেষ্টা হয়েছিল নোটগুলো। স্ক্যানিংয়ের সময় সন্দেহ হয় শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের। পরে খুলে সাদা বইয়ের আড়ালে ওই পার্সেলে পাওয়া যায় দুই টাকার নোটের বান্ডেল।
পাচারকারী, প্রেরক ও প্রাপকের ভুয়া কিংবা সাঙ্কেতিক ঠিকানা দেয়া ছিল পার্সেলের গায়ে। অন্য কেউ অভিনব এমন কৌশল বুঝতে না পারলেও ঠিকই সফলভাবে গন্তব্যে পাচার করা সম্ভব বলে অভিমত তদন্তকারী শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের।
জব্ধ করা কার্টনে লেখা ঠিকানা অনুযায়ী রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ডা. রেদওয়ান আল করিম ভূঁইয়া (১৪/৩, বি, উত্তর-পূর্ব যাত্রাবাড়ী, দ্বিতীয় তলা, ঢাকা-১২০৪) হংকং ও বেইজিংয়ে এটি পাঠাচ্ছিলেন। প্রথম কার্টনের ওপর হংকংয়ের বাও রুই নামের একজন ও দ্বিতীয় কার্টনে শেইফেং জিন, বেইজিং, চীন নামে আরেকজন প্রাপকের ঠিকানা লেখা রয়েছে। হংকংয়ের ঠিকানায় ২৪টি প্যাকেটও চীনের ঠিকানায় চারটি প্যাকেটে দুই টাকার নোট ছিল।
তবে কেন বাংলাদেশের দুই টাকার নোটের প্রতি ভারত ও চীনের আগ্রহ?
বাংলাদেশের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রাথমিক তদন্তে তিনটি এবং বিবিসির অনুসন্ধানে আরও একটি কারণ জানা গেছে। কারণগুলো যথাক্রমে পরীক্ষামূলক পাচার, সিকিউরিটি সূতা বের করে বড় নোট তৈরির পরিকল্পনা ও সৌখিন মুদ্রা সংগ্রহকারীদের চাহিদা মেটানো এবং হেরোইন বা ইয়াবা সেবনের জন্য এই নোটের ব্যবহার।
আটকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, এসব নোটের মাধ্যমে পাইপ তৈরি করে হেরোইন ও ইয়াবা গ্রহণ করে মাদকাসক্তরা। সিগারেটের প্যাকেটের ভেতরে থাকা রাংতাও একাজে ব্যবহার করা হয়। তবে এখন অনেকের কাছেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দুই টাকার নতুন নোট।
ফলে এসব নোট সীমান্তের চোরাইপথ এবং আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টা দেখা যাচ্ছে বারবার। ভারতের বাজারে এই দুই টাকাই প্রতিটি ৫ রুপি পর্যন্ত মূল্যে বিক্রি করা হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। নতুন দুই টাকার নোটের একদিকে শহীদ মিনারের ছবি। অন্যপাশে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানের মুখাবয়ব। আর পুরনো নোটের একদিকে দোয়েল পাখির ছবি রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন