চীন-রাশিয়ার বিরোধিতা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হলো না জাতিসংঘে

কোন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হল রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের উম্মুক্ত বিতর্ক। মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে জাতিগত নিধন বন্ধে বৃহস্পতিবার এ উম্মুক্ত বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

২০০৫ সালের পর প্রথমবারের মতো পূর্বনির্ধারিত আলোচ্যসূচিতে এসেছে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ। ১৩ সেপ্টেম্বরের পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আলোচনা হল নিরাপত্তা পরিষদে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ দেশের প্রতিনিধি রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন বন্ধ এবং সেই সাথে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে জোরালো আহবান জানানো হয়। কিন্তু চীন ও রাশিয়ার বিরোধীতায় শেষ পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব ছাড়াই শেষ হয় এ বিতর্ক।

মিয়ানমারের ওপর কঠোর পদক্ষেপ আরোপের বিরোধীতা করে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়া সাম্প্রতিক সহিংস পরিস্থিতির জন্য ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ দায়ী করে।

সভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান তুলে ধরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘সেফ জোন’ তৈরির প্রস্তাব দেন।

এর আগে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সাথে মিয়ানমার সরকারকে সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধের আহবান জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারের সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এ মুহূর্তে বিশ্বের দ্রুত শরণার্থী সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানায়, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান নিয়ে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত আলোচনায় আন্তোনিও গুতেরেস এ আহ্বান করেন। এতে তিনি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, সেনা অভিযান বন্ধ এবং সহিংতাপূর্ণ অঞ্চলে মানবাধিকার কর্মীকে প্রবেশে জরুরী পদক্ষেপ নিতে বলেন। তিনি তার বক্তব্যে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করেন। একই সাথে অবিলম্বে সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশের দাবি জানান।

তবে নিরাপত্তা পরিষদের অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।