চীনকে টেক্কা দিতে ‘হারকিউলিস’ যুদ্ধবিমান আনছে ভারত
ভারতের ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে চীনের সেনাবাহিনী। তাই সিকিম থেকে অরুণাচলের হিমালয়-সীমান্তজুড়ে অতন্দ্র সতর্কতা ভারতীয় সেনাবাহিনীতেও। এমতাবস্থায় এই মাসেই পশ্চিমবঙ্গের বিমান ঘাঁটিতে আসছে শক্তিধর যুদ্ধবিমান ‘হারকিউলিস’।
মূলত সেনা ও পণ্য পরিবহণের কাজে দক্ষতার সুবাদে বিশ্বজুড়ে যার নাম সুবিদিত। পোশাকি নাম ‘সি১৩০জে’ বিমান। কলকাতা থেকে মাত্র দেড়শো কিলোমিটার দূরে পানাগড়ের অর্জুন সিং এয়ার ফোর্স স্টেশনে এই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে ১০ আগস্টের মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে মোট ৬টি ‘সি১৩০জে’ হারকিউলিস বিমান।
বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ভারত ও চীন সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা রয়েছে। চিনের দিক থেকে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে তার সমুচিত জবাব দিতে তৈরি রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাই আগামী কিছুদিনের মধ্যে পানাগড়ে পরপর এতগুলি হারকিউলিস বিমান নিয়ে আসার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এস বিরদির কথায় “বিমানগুলি যতক্ষণ না আসছে, ততক্ষণ এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো যাবে না। ”
বিমান বাহিনী সূত্রের খবর, এই বিমানগুলির বিশেষত্ব হচ্ছে, এগুলি একসঙ্গে প্রায় আড়াইশো সেনা বহন করতে সক্ষম। পানাগড়ে বিমান বাহিনী ঘাঁটির কাছেই রয়েছে সেনাশিবির। সেখানে তৈরি হয়েছে পাহাড়ি যুদ্ধে পারদর্শী বিশেষ বাহিনী মাউন্টেন স্ট্রাইক ফোর্সের ঘাঁটি।
এই বাহিনী পাহাড়ের আনাচে কানাচে অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে লড়াইয়ে পটু। সেনা সূত্রে জানা গেছে, এরইমধ্যে এই পার্বত্য বাহিনীর কিছু সদস্যকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সিকিমে। সেখানে ৩৩ কর্পসের সঙ্গে কাজ করছে তারা।
চীনারা অস্বাভাবিক কিছু করলে পানাগড়ের মাউন্টেন স্ট্রাইকিং ফোর্সকে নিয়ে রওনা দেবে ‘সি১৩০জে হারকিউলিস’ যুদ্ধবিমান। যেমন সিকিমের ক্ষেত্রে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হারকিউলিস পৌঁছে দেবে সৈন্যবহর। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে অথবা সড়কপথে সিকিমের চীন সীমান্তে পৌঁছে যাবে বাহিনী।
পাশাপাশি, উত্তর-পূর্ব ভারতের ৬টি বিমানঘাঁটির আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। হারকিউলিসের দৌলতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেগুলিতেও বিমানে করে পৌঁছে যেতে পারে বাহিনী। আবার হারকিউলিস এমন বিমান, যার ভিতর থেকে সীমান্তবর্তী এলাকায় প্যারাসুটে করে লাফ দিতে পারে প্যারাট্রুপাররাও। প্রয়োজনে ৬টি বিমানে করে একসঙ্গে দেড় হাজার সেনাকে চীনের সীমান্তবর্তী এলাকায় বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
একসঙ্গে দু’টি করে বিমান ১৫ দিনের মধ্যে আমেরিকা থেকে হাজির হচ্ছে পানাগড়ের ঘাঁটিতে। তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিমান হ্যাঙ্গার ও আধুনিক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম। প্রথম কয়েকদিন মহড়ার পর তাদের তৈরি রাখা হবে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর জন্য। বিমান বাহিনী জানিয়েছে, অপারেশন বেস হওয়ার পর পানাগড় থেকে প্রয়োজনে ওড়ানো হতে পারে ফাইটার যুদ্ধবিমান বা বোমারু বিমানও।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন