চুয়াডাঙ্গায় সড়কে দুর্ঘটনার পাল্লাপাল্লি; ট্রাফিক বিভাগের নেই পদক্ষেপ
চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনা যেন পিছু ছাড়ছে না। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে পেশাগত ও অপেশাদার গাড়ীচালকদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকায় এ জেলার যেখানে সেখানে যখন তখন বিভিন্ন যানবাহনে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে করে কেউ মৃত্যুবরণ করছে আবার কেউ পঙ্গুত্ববরণ করছেন। অথচ সড়ক আইন থাকলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় একটি অভিশপ্ত জীবনে ধাবিত হচ্ছে। তারপরও ট্রাফিক বিভাগের কোনো ভ্রুক্ষেপ না থাকায় অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে মানুষ।
এমনিভাবেই মাছবোঝাই একটি ট্রাকের সাথে ইজিবাইকের সংঘর্ষে ধাক্কা দেয়ার ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ আগস্ট) জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া ফুটবল মাঠসংলগ্ন সোনালী ব্যাংকের সামনে হাটবোয়ালিয়া টু মেহেরপুর গাংনী আঞ্চলিক সড়কে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো আজ সোমবার ফজরের আযানের পরপরই পাটের অঁাশ চিকানো কাজের জন্য ৮ জন শ্রমিক ইজিবাইক ভাড়া করে মেহেরপুর জেলার গাংনীর উপজেলার উদ্দেশ্যে বের হয়। পথিমধ্যে হাটবোয়ালিয়া ফুটবল মাঠসংলগ্ন সোনালী ব্যাংকের সামনে পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকটি ইজিবাইককে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটায়। সেসময় ড্রাইভারসহ ইজিবাইকে থাকা ৯ জনের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। অপর আরও ৮ শ্রমিক মারাত্মকভাবে আহত হলে হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজন মৃত্যুবরণ করেন। আহতদের মধ্যে অপর ৬জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে রাজশাহী রেফার্ড করা হয়। সেসময় তাদেরকে রাজশাহী নেয়ার সময় পথিমধ্যে আরও একজনের মৃত হয়। বাকীরা চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহতরা হলেন‒আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে সাজিবুল (৬০) ও একই গ্রামের সখা মোল্লার ছেলে খাইরুল ইসলাম (৪০)। উভয় ব্যক্তির দুই সন্তানের জনক এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ নাজমুল হোসেন বলেন, ট্রাকের সাথে দুর্ঘটনায় ৯জন রোগী আসে, তাদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং অন্য এক ব্যক্তি হারদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আহত অন্যান্য ব্যক্তিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে নেয়ার সময় পথিমধ্যে আরেকজন মারা যায়। তবে আহতরা দূরদূরন্ত চিকিৎসা নেয়ায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তাদের নাম পাওয়া সম্ভব হয়নি।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার্স ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ জানান, নিহতদের মরদেহ হারদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। ট্রাকটি জব্দ করে হাটবোয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা গেলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত (১৯ আগস্ট), (২০ আগস্ট) ও (২১ আগস্ট) সোমবার পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৬ জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে, স্থানীয়রাও ট্রাফিক বিভাগের মোটরযান অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ট্রাফিক বিভাগ সড়ক আইন বাস্তবায়ন না করার ফলেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা। সেইসাথে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও সড়ক আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট উচ্চ মহলের কাছে দাবি তোলেন তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন