চুয়াডাঙ্গায় হাজার হাজার ঘণ্টার গরম উড়ে গেলো একনিমিষেই
আল্লাহ পারে না এমন কিছু দুনিয়ায় নেই। প্রতিনিয়তের অংশ হিসেবে তা আজকেও প্রমাণ করলো আল্লাহতায়ালা। হাজার হাজার ঘণ্টার গরম একনিমিষেই উড়িয়ে দিয়ে গেলেন তিঁনি।
এদিকে, বৈশাখ মাসজুড়েই গরমের শীর্ষপর্যায়ে অবস্থান করছিল চুয়াডাঙ্গা জেলা। আর এ জেলায় শীতের সময় শীত বেশি গরমের সময় গরমও। এই দুই সময়ের চিরচেনা কাল বয়েই আসছে মানুষ। বৈশাখ মাসের প্রথম থেকেই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে কাঠফাঁটা রোদের খরতাপে মানুষের জীবন অস্থির হয়ে উঠেছিল। এমনকি বাইরে বেরিয়ে খেটে খাওয়া মানুষগুলো ছিলো বড্ড বিপদে। আয় করার উপায়ও হারিয়েছে নিজস্ব পেশায়। সাময়িকভাবে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের।
গত একমাসের ঊর্ধ্বে চলমান তীব্র তাপদাহে প্রতিবছরের মতো এবারও রেকর্ড গড়েছে চুয়াডাঙ্গা। শুধু তাই-ই নয়-এবার তাপদাহের শীর্ষ স্কেলে উঠেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যার প্রভাবে রেডঅ্যালার্টসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বারবার। চামড়া জ¦লা রোদের খরতাপ নিয়েই দিন যাপন করছিল মানুষ। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ নামাজ ও মোনাজাত করে স্থানীয়রা।
এমনকি এবারের ইতিহাসজনক গরমে হিটস্ট্রোকে মারাও গেছে কয়েকজন। সেই নিরাশার অবস্থান থেকে সরে এসে অবশেষে আকাশ ভেদ করে দমকা বাতাসের সাথে চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টি নিক্ষেপ করেছেন আল্লাহতায়ালা।
আজ সোমবার (০৬ মে) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শুরু হওয়া পৌনে একঘণ্টার মতো ঝড়ো বাতাসের সাথে শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতি না হলেও স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছে এখানকার মানুষ। সাথে মায়াবী গর্জনে বজ্রপাতও হয়। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা এখনও শোনা যায়নি। সবথেকে ভালো লাগার বিষয় হলো-যতোক্ষণ বৃষ্টি হয়েছে ঠিক ততোক্ষণই শিল পড়েছে। এখন ঠাÐা বাতাস মানুষের শরীরে মিশে শান্তির উষ্ণতা বইছে চুয়াডাঙ্গায়।
বৃষ্টির পর কথা হয় আব্দুল নামের এক রিকসাওয়ালার সাথে। তিনি বলেন, অসহ্য গরম আর খরতাপের মধ্যে কাজ করতে পারছিলাম না। কোনো রকম একটু একটু বাইরে বেরালেও ভাড়াও মেলেনি। আজকের বৃষ্টিতে অনেক প্রশান্তি পাচ্ছি। এমন আবহাওয়া থাকলে কাজ করতে সমস্যা হবে না।
ফুটপাতে বসে স্যান্ডেল সেলাইকারী বলেন, বৈশাখ মাস জুড়েই যেহারে গরম আর রোদের তাপ হয়েছে। রাস্তার ধারে নিচে বসে সারাদিনও কাজ করতে পারিনি। মনে হয়েছে রাস্তার পূর্ণ চামড়া জ¦লা তাপদাহ শরীরে বিঁধে যাচ্ছে। আজকে বৃষ্টি হওয়ায় অনেকই ভালো লাগছে। আশা করি এমন থাকলে আমাদের রাস্তার ধারে বসে কাজ করতে সমস্যা হবে না।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কোথাও কোথাও বৃষ্টি ও ঝড়ের খবর পাওয়া গেলেও আজ (৬ মে) সোমবার দুপুরের পর থেকে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। আগামী ১২ মে পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন