ছাত্র-জনতা হত্যার বিচারের আগে ফ্যাসিবাদের রাজনীতি নয়, গণভবন হবে জাদুঘর : উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত
ছাত্র-জনতা হত্যার সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসিত করার কোনো সুযোগ দেবে না অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইয়া।
বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমনটি জানান।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে থাকা অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেছেন আসিফ।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি বিভিন্ন উপায়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। দেশের মানুষ তাদের অপতৎপরতা বিষয়ে সজাগ আছে। ছাত্র-জনতা হত্যার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।
ফ্যাসিবাদী দল বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক দল বা জোট বাংলাদেশে রাজনীতির নামে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল তাদেরই বুঝানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করার সুযোগ পাবে কি না সেটি আমরা জনগণের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তারা পাবলিক প্রোগ্রাম করতে পারবে কিনা সেটি এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা এটিকে নিরুৎসাহিত করব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ বলেন, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার হবে কি না তা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় চিন্তা করবে। তারা যেহেতু বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে সেহেতু তাদের হত্যার দায় স্বীকার করতে হবে। তাদের বিচারও নিশ্চিত করা হবে।
আসিফ বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক মাসপূর্তিতে দেশের সকল মানুষকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। সকল শহীদকে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। আন্দোলনে শহীদ হওয়া সকলের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়া শহীদদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটা সম্মেলন করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার।
সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি ও সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। সরকার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে নিয়ে বন্যার্তদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছে।
শ্রমিক আন্দোলন প্রসঙ্গে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া সমাধানে কাজ করবে।
এছাড়া ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান আসিফ মাহমুদ।
উপদেষ্টা পরিষদের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো পরাজিত আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায় স্বীকার করতে হবে। গণহত্যার দায় স্বীকার না করে তারা এখানে রাজনীতি করবে কী করে? আমি তো মনে করি না সেটা করা উচিত। বরং তাদের দায় স্বীকার করে বিচারের সম্মুখীন হওয়া উচিত। তারপরে তারা পলিটিক্স করতে পারে। তার আগে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন