জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

২০১৬ সালে বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড বেড়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে একই সন্ত্রাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের তৎপরতার প্রশংসা করেছে তারা। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র দফতর থেকে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরজিম’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ওই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।

বার্ষিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএস ও আল-কায়েদার মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, বিদেশি, পুলিশ, সেক্যুলার ব্লগার ও প্রকাশকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। নিজেদের কর্মকাণ্ড ও বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিয়েছে জঙ্গিরা। আইএস ও আল-কায়েদার সংশ্লিষ্ট কিছু প্রকাশনা, ওয়েবসাইট ও ভিডিওতে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে।

কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরজিম শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, এই অঞ্চলে আইএস ও আল-কায়েদা কয়েকটি হামলার চালানোর দাবি করেছে। এর মধ্য ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা উল্লেখযোগ্য। তবে বাংলাদেশ সরকার এসব জঙ্গি হামলার জন্য স্থানীয় জঙ্গি ও বিরোধী দলকে দোষারোপ করে। তবে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি হামলার দায়ভার স্বীকার করেছে আল-কায়েদা ও আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠী।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি অনুযায়ী, বিরোধী কিংবা স্থানীয় জঙ্গিদের প্রতি সন্দেহ জারি রাখলেও বাংলাদেশ সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অবস্থান করছে। আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে রেখে তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’

জঙ্গি সংগঠনগুলো সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে নিজেদের বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। আইএসের বেশ কয়েকটি ভিডিওতেও বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বিদেশি জঙ্গিদের ধরতে প্রয়োজনীয় আইন না থাকলেও বাংলাদেশ সন্ত্রাসী সন্দেহে কয়েকজন বিদেশি সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশ স্থল, জল ও আকাশ সীমারেখা শক্তিশালী করেছে। সামনে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সীমান্তে অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে।’

এছাড়া পাকিস্তানকে জঙ্গিদের অভয় আরণ্য বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। ইরান, সিরিয়া ও সুদানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে বিশ্বজুড়ে আগের বছরের তুলনায় সন্ত্রাসী হামলা কম হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, এ সময়ে আফগানিস্তান, সিরিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং ইয়েমেনে তুলনামূলক কম হামলা ও প্রাণহানির ঘটনায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিমাণ কমে আসে।