জনপ্রিয় পপ তারকা ক্রিস্টিন ম্যাকভির মৃত্যু
ফ্লিটউড ম্যাক ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য গায়িকা, গীতিকার ক্রিস্টিন ম্যাকভি মারা গেছেন।
বুধবার ৭৯ বছর বয়সী এ গায়িকার মৃত্যু হয় বলে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বলা হয়, গতকাল সকালে হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ সময় পরিবারের সদস্যরা পাশেই ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যান্ডের পক্ষ থেকেও ম্যাকভির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করা হয়। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ প্রকাশ করা হয়নি।
১৯৭০ সালে ফ্লিটউড ম্যাকে যোগ দেওয়ার পর দ্রুতই ব্যান্ডটির প্রাণভোমরা হয়ে ওঠেন ম্যাকভি। ‘লিটল লাইস’, ‘এভরিহয়ার’, ‘ডোন্ট স্টপ’, ‘সে ইউ লাভ মি’, ‘সংবার্ড’-এর মতো বিখ্যাত গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম।
সত্তর ও আশির দশকে ফ্লিটউড ম্যাক ছিল সারা দুনিয়ার অন্যতম সেরা রক ব্যান্ড। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায় ব্যান্ডের অ্যালবাম ‘রিউমারস’, যা তৈরি হয় ম্যাকভিসহ ব্যান্ডের আরও দুই যুগলের বিচ্ছেদের প্রেরণায়। চার কোটির বেশি বিক্রি হওয়া অ্যালবামটিকে সর্বকালের ব্যবসাসফল অ্যালবামগুলোর একটি বলে মনে করা হয়। ম্যাকভি ১৯৬৯ সালে ব্যান্ড সহকর্মী জন ম্যাকভিকে বিয়ে করার পর ব্যান্ডে যোগ দেন। তবে সাত বছর পর তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। বিচ্ছেদ হলেও তাঁদের মধ্যে পেশাদারি সম্পর্ক বজায় ছিল। ১৯৯৮ সালে ব্যান্ডটি ‘রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেমে’ জায়গা পায়।
ব্যান্ডের সঙ্গে নিজের একক অ্যালবামও প্রকাশ করেছেনে ম্যাকভি। ১৯৭০ ও ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত তাঁর দুই অ্যালবাম ‘ক্রিস্টিন পারফেক্ট’ ও ‘ক্রিস্টিন ম্যাকভি’ সাড়া জাগায়। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে ব্যান্ড থেকে আলাদা হয়ে যান ম্যাকভি। তবে সাময়িক এ অবসর ভেঙে প্রায় ১৫ বছর পর ২০১৪ সালে আবারও ফিরে আসেন।
ব্যান্ড থেকে বিরতি নেওয়া প্রসঙ্গে চলতি বছর দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাকভি বলেছিলেন, ‘সঙ্গীসাথি ছাড়া চেয়েছিলাম গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে। তখন আমি কেন্টে চলে যাই। একা একা রাস্তায় হাঁটতে খুব ভালো লাগত, কেউই আমাকে চিনতে পারত না। তবে একটা সময় আমি সবাইকে মিস করতে থাকি। এরপর মিককে ফোন করে বললাম, যদি আবার ফিরে আসি কেমন হয়?’
ম্যাকভি ছিলেন সত্তর ও আশির দশকের পপ সংগীতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। যেমন গাইতেন, তেমনি দুর্দান্ত লেখার হাত ছিল। তাঁর লেখায় প্রেম ও সম্পর্কের গল্প উঠে আসত।ম্যাকভির মৃত্যুতে বিশ্বসংগীতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ইগলস, হ্যারি স্টাইলসসহ শোক প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
১৯৪৩ সালের ১২ জুলাই ল্যাঙ্কাশায়ারে জন্ম ক্রিস্টিন ম্যাকভির। মাত্র ৪ বছর বয়সে পিয়ানো শেখা শুরু, ১১ বছর বয়সে গানকে সিরিয়াসলি নেন। তবে গায়িকা হবেনই এমনটা ভাবেননি। আর্ট স্কুলে পড়তেন, ঠিক করে রেখেছিলেন শিক্ষকতা করবেন।
তবে সংগীতপ্রেমী একদল বন্ধু পেয়ে ভাবনার বদল হতে সময় লাগেনি। প্রথমে বন্ধুদের সঙ্গে ব্যান্ড শুরু করেন। পরে যুক্ত হন ফ্লিটউড ম্যাকের সঙ্গে। এর পরের বাকিটা ইতিহাস। সময়ের অন্যতম সেরা এ পপ গায়িকার পথচলা থেম গেল গতকাল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন