জাকির নায়েককে কখনও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না : এইচ টি ইমাম
বিতর্কিত ইসলামি প্রচারক জাকির নায়েককে কখনও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
শনিবার দুপুরে নয়াদিল্লিতে আলোচনা শেষে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। খবর পিটিআই।
‘ভারত-বাংলাদেশ : ঐতিহাসিক ও সমকালীন প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে ভারতের ‘থিংক ট্যাংক’ অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ)।
প্রশ্নোত্তরকালে জাকির নায়েককে তার দেশে ফেরানোর বিষয়ে ভারতকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনই তার ভূমিকে নয়াদিল্লির প্রতি শত্রু ভাবাপণ্ণদের ব্যবহার করার অনুমতি দেবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা পুরোপুরিভাবে ভারতকে সহযোগিতা করব। আমাদের সরকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। বাংলাদেশের মাটি কখনই আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে শত্রুভাবাপণ্ণদের কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনার পর জানা যায় যে, অন্তত দুজন সন্ত্রাসবাদী জাকির নায়েকের ইসলামসংক্রান্ত প্রচার দিয়ে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। এর পরই এই ভারতীয় প্রচারক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন।
এর মধ্যে অন্যতম সন্দেহভাজন হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজ হামলার আগে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে জাকির নায়েককে উদ্ধৃত করে একটি পোস্ট দেন।
জাকিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলার পর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তিনি ভারত ছাড়েন।
২০১৬ সালে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রুপের রেষারেষি ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে প্রথমে জাকিরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনে মামলা করে এনআইএ।
পরে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ ঘুরে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন তিনি। ভারতে বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া জঙ্গিরাও জাকির নায়েককে অনুসরণ করত বলে অভিযোগ রয়েছে। পাটনার গান্ধী ময়দান ও বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে আটক জঙ্গিদের কাছ থেকেও জাকিরের বক্তৃতার সিডি ও বই উদ্ধারের দাবি করেছিল ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।
পরবর্তী সময়ে এনআইএ এবং মুম্বাই পুলিশ জাকির নায়েক পরিচালিত ফাউন্ডেশনের কিছু কর্মকর্তার বাসাসহ ১০টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। ওই ফাউন্ডেশনটি বিদেশ থেকে তহবিল গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত ছিল।
ভারতছাড়ার পর ৫২ বছরের জাকির মালয়েশিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। গত জানুয়ারিতে ভারত সরকার জাকিরকে প্রত্যর্পণ করতে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানায়। মালয়েয়িশার সঙ্গে দেশটির প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, তাকে ভারতের কাছে প্রত্যর্পণ করবে মালয়েশিয়া।
এই খবর প্রকাশের পর জাকির এক বিবৃতিতে বলেন, অন্যায় বিচার থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করার আগে পর্যন্ত তিনি ভারতে ফিরবেন না।
শুক্রবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ জানিয়েছেন, জাকির নায়েক তার দেশের জন্য সমস্যা তৈরি না করলে তাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন