জাপানে আম শিনরিকোর নেতাসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

জাপানে উগ্রবাদী মিশ্র ধর্মীয় সংগঠন আম শিনরিকোর নেতাসহ সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ১৯৯৫ সালে সংগঠনটির সদস্যরা রাজধানী টোকিওর একটি রেল স্টেশনে সারিন গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয় এবং এক হাজারের বেশি লোক আহত হয়। জাপানে যেটি সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা।

জাপানি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিন্দু ও বৌদ্ধ এবং পরবর্তীতে খ্রিস্ট ধর্মীয় বিশ্বাসের সংমিশ্রনে নতুন একটি ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিতে গঠিত সংগঠনটির অন্তত আরো ছয়জন সদস্য মৃত্যুদণ্ডের তালিকায় রয়েছে। যাদের মৃত্যুদণ্ড শিগরিরই কার্যকর করা হতে পারে।

সংগঠনটির নেতা শোকো আসাহারার মৃত্যুদণ্ড শুক্রবার সকালে টোকিওর একটি কারাগারে কার্যকর করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রী পরিষদ প্রধান ইওশিহিদি সুগা। আসাহারার পর পরই বাকি ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জাপানি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে।

এর আগে জানুয়ারিতে এই মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়। কারণ জাপানি আইন অনুযায়ী সকল অভিযুক্তের বিচার চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যায় না। সকলের আপিল নিষ্পত্তি হলে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এরপরই শুক্রবার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

প্রসঙ্গত, আসাহারার বিরুদ্ধে আরো মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৪ সালে তার সংগঠনের পক্ষ থেকে আরেকটি সারিন গ্যাস হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৮ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক লোক আহত হয়।

উল্লেখ্য, শোকো আসাহারা, চিঝু ম্যাতসুমোটো নামেও পরিচিত, ১৯৮০ সালে ওই সংগঠন প্রতিষ্ঠা এবং বুদ্ধের পর নিজেকে দীক্ষাপ্রাপ্ত লোক বলে দাবি করেন।

আম শিনরিকো ১৯৮৯ সালে জাপানে একটি ধর্মীয় সংগঠন হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে এটি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার লোক এর অনুসারী হয়।

কিন্তু ১৯৯৫ সালের ওই হামলার পর এটি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়। তবে একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায়নি। বরং আলেফ বা হিকারি নো ওয়া নাম ধারণ করে কার্যক্রম চালাতে শুরু করে। আম শিনরিকো যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বেশ কিছু দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আলেফ বা হিকারি নো ওয়া জাপানে একটি বৈধ সংগঠন। যদিও এটিকে একটি ‘ভয়ংকর ধর্মীয়’ সংগঠন হিসেবে বিবেচনা এবং কড়া নজরদারি রাখা হয়।