জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এক রকম উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে জিতেছে টাইগাররা। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে ২৮ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে ২৪৬ রানের বেশি করতে দেয়নি টাইগার বোলাররা। ২৪৭ রানের লক্ষ্যটা টাইগার ব্যাটসম্যানরা পেরিয়ে যায় ৩৫ বল হাতে রেখেই।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করলেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে দলকে একা টানতে হয়েছিল ইমরুলকে। অন্যদের ব্যর্থতায় শঙ্কাই জেগেছিল সেদিন। যে শঙ্কা শেষ পর্যন্ত দূর হয় সাইফ উদ্দিনের সহায়তায়।

কিন্তু এদিন শুরু থেকেই দুর্দান্ত বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ১৪৮ রান যোগ করে টাইগাররা। লিটন খেললেন সাবলীল। ইমরুল যেন আগের দিন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই শুরু করলেন আবার। শুরুতে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় নিয়েছেন এই যা। ৯.৩ ওভারে ৫০ রান পূরণ করে ফেলে বাংলাদেশ। পরের ৫০ রান আসে আরো দ্রুত। ১৫.৪ ওভারেই দলীয় ১০০ রান পূর্ণ টাইগারদের।

সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে লিটন ফিরেন ৮৩ রান করে। সিকান্দার রাজার শিকার হওয়ার আগে ৭৭ বলের ইনিংসে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান লিটন। এরপর উইকেটে আসেন ফজলে রাব্বী। এদিনও ‘ডাক’ মেরে ফিরেছেন তিনি। অভিষেকের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই ডাক মেরেছেন রাব্বী। ৪ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারালেও কোনো শঙ্কা চাপতে দেননি ইমরুল। মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে দলকে নিয়ে যান সহজ জয়ের পথে।

কিন্ত নার্ভাস নাইন্টিজে কাটা পড়ে আক্ষেপে পুড়েন ইমরুল। ১১১ বলে ৯০ রান করে ফিরেন তিনি। তাকেও শিকার বানিয়েছেন সিকান্দার রাজা। এদিন ৭টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান ইমরুল।

এদিকে মোহাম্মদ মিথুনকে নিয়ে বাকী কাজটা সারেন মুশফিকুর রহীম। এদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার পূরণ করেন মুশফিক। তার আগে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গড়েছেন ২০০ ডিসমিসালের রেকর্ড। মুশফিক শেষ পর্যন্ত ৪০ রানে অপরাজিত থেকে যান। ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করা মোহাম্মদ মিথুন করেন অপরাজিত ২৪ রান।

এরআগে জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডাররা যেভাবে খেলছিলেন তাতে স্কোরটা ২৭০ প্লাসও হতে পারতো। কিন্তু স্লগ ওভারে টাইগারা দুর্দান্ত বোলিং করলেন। ফলে সফরকারীদের স্কোরটা আর আড়াইশও পার হতে পারেনি।

শুরুতে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার উইকেট নেওয়া সাইফউদ্দিন শেষ দিকে নেন আরো ২ উইকেট। ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তিনি। পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও। মাশরাফির সিকান্দার রাজাকে ও মোস্তাফিজের পিটার মুরকে শিকার বানানো ছিল বড় টার্নিং পয়েন্ট।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন টেইলর। ৪৯ রান করেছেন সিকান্দার রাজা। ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন শন উইলিয়ামস। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ৩ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।