জেলে বসে আইন শিখে আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি

শিক্ষাগত যোগ্যতা সপ্তম শ্রেণি হলেও ১১ বছর কারাগারে বন্দি থেকে আইন শিখেছেন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য সাইফুল ইসলাম। অন্যের উপর নির্ভর করতে না পেরে সাইফুল ইসলাম এখন নিজের মামলা নিজেই পরিচালনা করেন। সোমবার দুপুরে একটি বিস্ফোরক আইনের মামলায় গাজীপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এরপর আদালতে আড়াই ঘণ্টা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে ১৩টি যুক্তি তুলে ধরে নিজেকে নির্দোষ দাবী করে খালাস চাইলেন সাইফুল ইসলাম।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মাৎ কামরুন নাহারের আদালতে সাইফুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপন করেন।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) জাসমীন আহমেদ জানান, বন্দর থানায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) দায়ের করা একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় জেএমবি সদস্য সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আদালত এ বিষয়ে আরো শুনানির জন্য ১১ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বিএম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেছি। আইন-কানুন সম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই। ১১ বছর যাবত কারাগারে বন্দি রয়েছি। এরমধ্যে টাঙ্গাইলের একটি মামলায় আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে দুইটি মামলায় ১৫ ও ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার কারা বন্দিদের জন্য আইনি সহযোগিতা পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কারাগারে বসে চাইলেই সহজে মামলার নথিপত্র হাতে পাই। আইন-কানুন না বুজলে কারাগারের পক্ষ থেকে বুজিয়ে দেওয়া হয়। তাই কারাগারের সহযোগিতায় এখন নিজের মামলা নিজেই পরিচালনা করছি।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের মেজর আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল ২০০৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার বায়না বাইপাস সড়কে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ জেএমবি সদস্য সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। সাইফুলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, তাকে নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দায় মাহবুবের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২১টি দেশে তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড, পাওয়ার জেল ও তিনটি জিহাদি বই উদ্ধার করে।