জোড়া খুনের দায়ে এমপিপুত্র রনির যাবজ্জীবন
বহুল আলোচিত রাজধানীর ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলার একমাত্র আসামি আওয়ামী লীগের নেত্রী ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেগম পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আদালত এ রায় দিয়েছেন।
বুধবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, আসামি বখতিয়ার আলম রনি ঘটনার সময় মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার মেয়ে হাসপাতালে থাকায় তিনি বিষণ্নতায় ছিলেন। তিনি (রনি) ওই সময় মদপানে নেশাগ্রস্ত ছিলেন। সে লাইসেন্সবিহীন পিস্তল দিলে মামলার ভিক্টিমদের গুলি করেন। সে জানতেন গুলি করলে তারা মারা যাবেন।
এ ঘটনায় তার (রনি) মৃত্যুদণ্ড শাস্তি হয়, কিন্তু তার (রনি) শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হলো। একই সঙ্গে ৫০ হাজার জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
গত ১৫ জানুয়ারি রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উস্থাপন শেষে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম রায় ঘোষণার জন্য আজ (৩০ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলার রায় ঘোষণার জন্য তৃতীয়বারের মতো দিন ধার্য করা হয়।
গত ৪ অক্টোবর মামলাটি রায়ের জন্য থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য প্রয়োজন মনে করেন আদালত। ওইদিন রায় না দিয়ে ১৭ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তার পুনরায় সাক্ষ্য-জেরার জন্য দিন ধার্য করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম। এ ছাড়া গত বছরের ৮ মে এ মামলায় রায়ের জন্য দিন ধার্য থাকলেও আদালত মনে করছেন মামলাটির বিষয়ে অধিকতর যুক্তিতর্কের প্রয়োজন আছে। ফলে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলার বিষয়ে অধিকতর যুক্ততর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন। এরপর মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি হয়।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে নিউ ইস্কাটনে মদ্যপ অবস্থায় রনি নিজ গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েন। এতে রিকশাচালক হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান। পরবর্তীতে হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম রমনা থানায় অজ্ঞাত পরিচয়ে কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ২৪ মে মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ৩১ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে রনিকে গ্রেফতার করে। পরে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই রনিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীপক কুমার দাস।
২০১৬ সালের ৬ মার্চ রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন নাহার। মামলায় ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ২৪ জন সাক্ষ্য দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন