টিউলিপ সিদ্দিক : ব্রেক্সিট ভোটে তিনি কেন আলোচনায়?
ব্রিটেনে পার্লামেন্টে বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট ইস্যুতে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। ভোটাভুটিতে অংশ নেয়া নিয়ে আলোচনায় এসেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
উপরে হাউজ অফ কমন্সের এমপিদের যে ভিড় দেখতে পাচ্ছেন সেখানেই হুইল চেয়ারে বসা আছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই এমপি সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনী। তাঁর ছোটো বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
ব্রেক্সিট ইস্যুতে ভোট দিতে এলেও তার আসলে তখন সেখানে থাকার কথা ছিলোনা।
কারণ তিনি মা হতে চলেছেন এবং দ্বিতীয় বারের মতো মা হওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছেন।
যখন ভোটাভুটিতে অংশ নিতে আসেন পার্লামেন্টে তখন আসলে তার অস্ত্রোপচার কক্ষে থাকার কথা।
কিন্তু তিনি পার্লামেন্টে এসেছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক্সিট ইস্যুতে ভোট দেয়ার জন্য।
তিনি জানিয়েছেন, যাতে ভোট দিতে পারেন সেজন্য নিজেই সিজার করার সময় এ সপ্তাহের শেষ দিকে নিয়ে গেছেন।
বিতর্ক উস্কে দিলেন টিউলিপ?
সন্তান জন্মদান পিছিয়ে দিয়ে ভোটে অংশ নিতে পার্লামেন্টে এসে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
কারণ যুক্তরাজ্যে কোনো এমপির পক্ষে প্রক্সি ভোট দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। এমনকি তিনি এখনি সন্তান জন্ম দিলেও।
তবে একটি পদ্ধতি আছে যাকে বলা হয় ‘পেয়ারিং’। যাতে কোনো দলের একজন ভোটে অংশ নিতে অপারগ হলে তিনি প্রতিপক্ষ দলের একজনকেও ভোট থেকে বিরত থাকতে রাজী করানোর সুযোগ নিতে পারেন।
অর্থাৎ দু’দল থেকে দুজন ভোটে অংশ নিবেননা।
মিজ. সিদ্দিক বলছেন, এ পদ্ধতিতে তিনি বিশ্বাসী নন কারণ টোরি চেয়ারম্যান ব্রান্ডেন লেইস মাতৃত্ব ছুটিতে যাওয়া লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক জো সুইনসনের সাথে ট্রেড বিলের ভোট নিয়ে এ ধরণের অঙ্গীকার করেও রাখেননি।
মিজ. সিদ্দিককে চিকিৎসকরা সিজার করাতে সোমবার বা মঙ্গলবার যেতে বলেছিলো কিন্তু পরে তারা সেটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পিছিয়ে দিতে রাজী হন যাতে করে পার্লামেন্টে গিয়ে ভোট দিতে পারেন তিনি।
“চিকিৎসকরা যেভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন তার একদিন পরেও যদি আমার সন্তান পৃথিবীতে আসে তাহলে সে সেই পৃথিবীতে আসবে যেখানে ব্রিটেন ও ইউরোপের মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্পর্কের সুযোগ বাড়বে। আমরা সেটার জন্যই লড়াই করছি”।
প্রক্সি ভোট নিয়ে বিতর্ক
টুইটারে অনেকেই ব্রিটেনের পার্লামেন্টকে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বা পুরনো ধ্যান ধারণার বলে সমালোচনা করছেন।
জর্জিয়া হিকস টুইট করেছেন: “প্রক্সি পদ্ধতি না থাকায় একজন মাকে সন্তান জন্মদানে বিলম্ব করতে হবে। এরপরেও লোকে তর্ক করবে এটি বৈষম্য নয় এবং সেখানে লিঙ্গ সমতা আছে”।
আরেকজন লিখেছেন: একজন নারীর এমন পরিস্থিতিতে পরা ২০১৯ সালে অবিশ্বাস্য।
আবার কেউ কেউ টিউলিপ সিদ্দিকের সমালোচনা করে বলছেন যে তিনি তার বাচ্চার স্বাস্থ্যের বিষয়টি উপেক্ষা করছেন।
ক্রিস বিচ বলছে, অন্য এমপিদের পথ দেখানো দরকার ছিলো যদি ব্যক্তিগত জীবনের জন্য কাজ ঠিকমতো করতে পারছেননা বলে কথা উঠে।
লেবার এমপি হ্যারিয়েট হারম্যান বলছেন: মিজ. সিদ্দিককে সিজার বা ভোট দুটির মধ্যে একটিকে বেছে নেয়া উচিত নয়।
কমন্স স্পিকার জন বারকাউ বলেছেন, প্রক্সি ভোট ছিলো মিস সিদ্দিকের চাওয়া কিন্তু এটা মঞ্জুর করার ক্ষমতা তার ছিলোনা।
ব্রেক্সিট ভোটের পর কমন্স সভায় বিষয়টি তুলেছেন এসএনপি স্বাস্থ্য বিষয়ক মুখপাত্র ফিলিপ্পা হুইটফোর্ড।
পয়েন্ট অফ অর্ডারে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সহকর্মী ও তার বাচ্চাকে ঝুঁকিতে ফেলছি। কারণ এ ধরনের পরিস্থিতিতে করণীয় বিষয়ে কোনো পদ্ধতিই নেই আমাদের, এটি খুবই লজ্জার”।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন