ট্রাম্পের ভয় : কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিতে পারে
হোয়াইট হাউসে আসার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কড়া নিয়ম চালু করেন যে; স্টাফদের কেউ তার ব্যক্তিগত জিনিসে হাত দিতে পারবে না, বিশেষ করে তার টুথব্রাশে। প্রেসিডেন্ট চান তার জিনিসপত্র তিনি যেভাবে ঘরে ফেলে যাবেন তা যেন ঠিক সেভাবেই থাকে।
এমনকি ময়লা কাপড়চোপড়ও মেঝেতে ফেলে যান তিনি। এ নিয়মের পেছনেও তার বিষপ্রয়োগের ভয় কাজ করে। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে লেখা মার্কিন সাংবাদিক মাইকেল উলফের ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি : ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ বইয়ে এ তথ্য উঠে এসেছে। বইটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর তা প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট।
মাইকেল উলফ তার বইয়ে লিখেছেন, কেউ তাকে বিষ খাইয়ে দিতে পারে এ ভয়ে তিনি ম্যাকডোনাল্ডসে খেতে পছন্দ করেন- কারণ কেউ জানবে না যে তিনি কখন সেখানে যাবেন এবং খাবারটাও সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি করে দেয়া হয়।
হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্প তার ঘরে মোট তিনটি টেলিভিশন দিতে বলেন। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে তিনি তার শোবার ঘরের দরজায় তালা লাগাতেও বলেন। এ নিয়ে তার সাথে সিক্রেট সার্ভিসের রেষারেষি হয়েছিল। কারণ তারা চাইছিল তাদের লোকেরা যেন ঘরে ঢুকতে পারে সে সুযোগ থাকতে হবে।
ট্রাম্প হচ্ছেন জন এফ কেনেডির পর প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি তার স্ত্রীর সাথে এক ঘরে থাকেন না, আলাদা শোবার ঘরে থাকেন।
উলফ লিখেছেন, ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ লোকেরাও তার বুদ্ধিমত্তা এবং দেশের নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রত্যেকেই তার নিজের মতো করে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বলতেন যেন প্রেসিডেন্টের যথেষ্ট জানাশোনা নেই, এমনকি তিনি তা নিয়ে ভাবেনও না।
একজন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট একটি ইডিয়ট, আরেকজন বলেছেন, তিনি ‘বিষ্ঠার মতো নির্বোধ।’ কুশনার এবং ইভানকার কাছে এফবিআই ডিরেক্টর কোমি ছিলেন মূর্তিমান আতংক। উলফ তার বইতে লিখছেন: বাচ্চারা অর্থাৎ ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার আতংকিত ছিলেন যে নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে এফবিআই যে তদন্ত করছিল- তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে।
তারা ভীত ছিলেন যে এফবিআই এবং বিচারবিভাগের তদন্ত রাশিয়া প্রশ্ন ছাড়িয়ে ট্রাম্প পরিবারের অর্থ-সম্পদের দিকে যাচ্ছে। কুশনারই নাকি এফবিআই প্রধান জেরেমি কোমিকে সরিয়ে দেবার জন্য চাপ দিচ্ছেলেন, এবং ব্যাপারটা যে ট্রাম্প নিজেই কাজটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তার সহকারীদের প্রায় কেউই জানতেন না – লিখছেন উলফ।
জাতিসংঘের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন বোল্টনকে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী করার কথা উঠলেও তার গোঁফের কারণে তা হয়নি। কারণ স্টিভ ব্যানন বলেছিলেন, ‘বোল্টনের গোঁফটা একটা সমস্যা। ট্রাম্প মনে করেন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপযুক্ত চেহারা নেই’- এক পার্টিতে বলেছিলেন তিনি।
শার্লটভিলের ঘটনার পর আগস্ট মাসে বিক্ষোভের সময় ট্রাম্প সব পক্ষের ঘৃণা, গোঁড়ামি, এবং সহিংসতার নিন্দা করে বিতর্ক সৃষ্টি করেন। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী সংগঠন কু ক্লাক্স ক্লান বা কেকেকের নিন্দা না করার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে।
উলফ তার বইয়ে লিখেছেন, ট্রাম্প মনে করতেন কেকেকে সম্ভবত তাদের পুরোনো মতাদর্শে এখন আর বিশ্বাস করে না, বা কিসে বিশ্বাস করে তা কেউ হয়তো জানেই না। বিবিসি বাংলা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন