ঠাকুরগাঁওয়ে প্যাথলজিতে ডাক্তারের হেনস্তায় রোগীরা অতিষ্ট

ঠাকুরগাঁও শহরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফেয়ার এক্স-রে এন্ড প্যাথলজিকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে।

জেলার ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটিতে কতিপয় একজন ভন্ড চিকিৎসকের কাছে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষ।

অনেকেই মন্তব্য করছেন সেখানে সেবা নিতে গিয়ে তারা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন সমালোচনা মূলক প্রচারণার অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধান করে জানা যায় প্রকৃত ঘটনা।

জানা যায়, ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টায় ওই প্যাথলজিতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে যান জেলায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য (ডিএসবি) এস আই হাবিবুল্লাহ্ ইসলামের স্ত্রী গর্ভবতী হাবিবা ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন ওই পুলিশ সদস্য ও তার শিশু সন্তান। সেখানে এই দম্পতিকে হেনস্তা ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটে।

ভূক্তভূগী হাবিবা ইসলাম জানান, সাড়ে সাতটার সময় আমাকে নেয়া হয় আল্ট্রাসনোগ্রামের জন্য। পেটে ক্রিমও লাগানো হয়। আমি যেহেতু মা তাই কৌতুহলী হয়েই ডাক্তার মামুনের কাছে জানতে চাই বাচ্চার ওজন ও মাপ। কিন্তু তিনি আমাকে সেটি না জানিয়ে আমি তাকে এমন কথা বলে বিভ্রান্ত করেছি । এমন অভিযোগ তার। সে সময় আমি জানতে চাই না বলার কারন কি? সে সময় তিনি তার পেশাগত দায়িত্ববোধ ভুলে আমাকে ওই অবস্থায় বেড থেকে তুলে দেয়।

বলে আপনি স্বেচ্ছায় যাবেন নাকি ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব। এ সময় তার আচরণ একদমই স্বাভাবিক ছিলনা। আমি খুব ভয় পেয়ে কাঁদছিলাম। পরে আমার স্বামী গিয়ে আমাকে সেখানে নিরাপত্তা দেয়।

স্বামী হাবিবুল্লাহ্ বলেন, আমি আমার শিশু কন্যাকে নিয়ে বাইরে ছিলাম। রুমের ভেতরে ডাক্তারের চেচামেচি শুনে প্রবেশ করে জানতে চাই ঘটনা কি?

আমাকে কোন কৈফত না দিয়ে ডাক্তার মামুন বলেন, বৌ ভক্ত হলে বাসায় সেটা এখানে না। তারপর তিনি কিছুতেই শান্ত না হয়ে চেচামেচি করছিলেন। ওখানে আরও অনেক গর্ভবতী মহিলা ছিলেন যারা ভিতস্থ ছিল।

গর্ভবতী সময়ে মায়েদের সাথে একজন ডাক্তারের এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয়। আমি এর জন্য আইনের আশ্রয় নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গণ্যমান্যরা বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়। কিন্তু ডাক্তার এতটুকুও অনুশোচিত ছিলেননা। পরে আমরা চলে এসেছি।

কিছুদিন আগে ওই প্যাথলজিতে সেবা নিতে গিয়েছিলেন শহরের হাজীপাড়ার গর্ভবতী মা জেসমিন আক্তার বলেন, ডাক্তারের আচরণ আমার ভালো লাগেনি। আমরা তো জানার জন্য টাকা দিয়ে আল্ট্রা সনোগ্রাম করতে যাই। কিন্তু ডাক্তার মামুনের আচরণে সেবা না নিয়ে চলে এসেছি। কাজের বিরক্ততা থাকতে পারে। এর জন্য রেস্ট নিতে হবে। কিন্তু নেশাগ্রস্থদের মতো উদ্ভট আচরণ আমরা সচেতনরা মেনে নিবোনা। ডাক্তারি একটা মহৎ পেশা। কিন্তু এমন ডাক্তার আমাদের জন্য মহা বিপদ।

প্যাথলজির সমালোচনা মূলক পোস্টে মন্তব্য করেন জিয়াউল হাসান নামের এক ভূক্তভূগী। লিখেন, এখানে একজন অর্থপ্যাডিক ডাক্তার আছে একেকটা ইনজেকশনের দাম ৩৫০০ টাকা নিচ্ছে। কি ইনজেকশন দিচ্ছে নামও বলেনা।

অভিযুক্ত ডা: মামুন ইবনে আশরাফীর সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই প্রশাসনের স্ত্রী (রোগী) জানতে চেয়েছিলেন আমি বলিনি। তারপর তিনি আমাকে বলেছিলেন ডাক্তাররা তো বলে এত কমার্শিয়াল হয়না রোগীর কাছে। এ কথা আমি মেনে নিতে পারিনি। আপনি বিনামূল্যে সেবা দেন কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।

ফেয়ার এক্সরে এন্ড প্যাথলজির পরিচালক করিমের কাছে সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। মেসেঞ্জারে লিখে তার কাছে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কোন মেসেজ দেখেও উত্তর দেয়নি।