ঠাকুরগাঁওয়ে ভূল্লীতে নেই পাবলিক টয়লেট, বেশি বিপাকে পড়ে নারীরা


ঠাকুরগাঁওয়ে ভূল্লীতে নেই পাবলিক টয়লেট, বেশি বিপাকে পড়েছে নারীরা এবং নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণকে। নবগঠিত ভূল্লী থানা বাস্তবায়ন হওয়ায় দিন দিন শিল্পাঞ্চলের ব্যাপ্তি ঘটায় এখানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে ও ব্যবসায়ীক কাজে আসছে মানুষ এবং আশেপাশের বড় বাজার হওয়ায় গ্রামঅঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে ছুটে আসে ঐতিহ্যবাহী ভূল্লী থানা বাজারে। কিন্তু চরম ব্যস্ত এ এলাকায় নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক গণশৌচাগার।
ফলে প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ব্যবসায়ী, কর্মমুখী ও পথ চলতি মানুষকে। এতে পুরুষেরা বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে বা বিভিন্ন খোলা জায়গায় মূত্রত্যাগ করেন। অনেক জায়গায় মলত্যাগ করে ছিন্নমূলেরা। ফলে বাড়ছে পরিবেশদূষণ, সেই সঙ্গে বাড়ছে জনভোগান্তিও।
সরজমিনে দেখা যায়, ভূল্লী বাজার হাইওয়ে সংলগ্ন একটি ব্যস্তময় বাজার। এখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন কর্মজীবি মানুষ ও ক্রেতারা। বাজারে একটি টয়লেট আছে সেটি আবার একটু দূরে ভূল্লী কেন্দ্রীয় মসজিদের তত্তাবধানে চলে। সেখানে গেলে সিরিয়াল নিয়ে থাকতে হয়। অনেক সময় লোক পাওয়া যায় না। অনেকে দূর হওয়ায় বাজারের আরেক প্রান্তে থাকা লোকজন যেতে চায় না। পুরাতন থানপট্টি পাশে বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে ২০১৯ সালে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে পাবলিক টয়লেট নির্মিত হলেও সেটি এখন অকেজো ও পরিত্যক্ত।বাজারের দক্ষিণ পাশে সোনার বাংলা হোটেল সংলগ্ন সেখানে ছোট একটি টয়লেট থাকলেও সেটিও এখন লোকবলের অভাবে বন্ধ হওয়ায় সাধারণ মানুষকে প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এ সময় অনেক পথচারী বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে ও মসজিদে টয়লেটে মলত্যাগ করেন।
ভূল্লী বাজারে টিন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল বলেন, পাবলিক টয়লেট না থাকায় বাজারে আসা মানুষ রাস্তার পাশে মল-মূত্র ত্যাগ করে। এতে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। দ্রুত সরকারিভাবে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা দরকার।
ভূল্লী বাজারে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেনাকেটা করতে আসা বড়গাঁও ইউনিয়নের রবিউল ইসলাম বলেন, ভূল্লী একটি থানা বাজার এখানে কোনো পাবলিক টয়লেট না থাকায় আমাদের খুব দুর্ভোগে পড়তে হয়। আমরা পুরুষ মানুষ তো কোনো না কোনোভাবে সারতে পারি; কিন্তু মহিলা ও বাচ্চাদের সমস্যা পোহাতে হয়।
পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকায় নারীদের ভোগান্তি অবর্ণনীয়।
হানিফ কাউন্টারে ঢাকা যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা এক গার্মেন্টস নারী কর্মী বলেন, ভূল্লীতে পাবলিক টয়লেট না থাকায় আমরা যারা দূর-দূরান্তে যাতায়াত করি, তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সুমন ইসলাম নামে এক আলু ব্যবসায়ী জানান, এত বড় এলাকা, কিন্তু সরকারি কোনো টয়লেট নেই। রাস্তার পাশে কিছু কিছু জায়গায় যেরকম দুর্গন্ধ, তাতে নাক চেপে চলাফেরা করতে হয়।
ভূল্লী বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমরা পাশের মসজিদের টয়লেট ব্যবহার করি। সাবেক ধানপট্টি পাশে একটি টয়লেট ছিল সেটি এখন পরিত্যক্ত। বাজারে অনেক জায়গা আছে। এখানে একটি পাবলিক টয়লেট ও গোসল খানা খুবই জরুরি। এটি করলে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে।
৫ নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেন, বাজারের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের একটি পাবলিক টয়লেট ছিলো সেটি এখন পরিত্যক্ত। যেহেতু ভূল্লী এখন থানা শহর তাই এখানে উন্নত মানের একটি পাবলিক টয়লেট ও গোসলখানা জরুরি প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহা. শামসুজ্জামান বলেন, ভূল্লীতে পাবলিক টয়লেটের সমস্যার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আধুনিক পাবলিক টয়লেট নিমার্ণের জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন