ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে রাস্তার কাজে বালুর পরিবর্তে মাটি মেশানোর অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণ কাজে পাথরের সাথে বালুর পরিবর্তে মাটি মেশানোর অভিযোগ উঠেছে।

আর পাথর ও মাটির ওই মিশ্রন রাস্তায় ফেলার পর রোলার করার সময় পুরো রাস্তা কাদায় ভরে যাচ্ছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীরা। এ নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, মাটি নয়, পাথরের সাথে বালু মেশানোর বিধান রয়েছে। এটি করা না হলে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানন তিনি।

জানাযায়, প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায় পীরগঞ্জ পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে চৌরঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৬ কিঃ মিঃ পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণের জন্য গত বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু করেন আব্দুল মঈন নামে ঠাকুরগাঁওয়ের এক ঠিকাদার। পাকা রাস্তার দু’ধারে গর্ত খুড়ে রেখে দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ রাখেন তিনি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে রাস্তায় চলাচলকারীরা। এর পর এলাকাবাসির পীড়াপিড়িতে গত জুন-জুলাই মাসে খুড়ে রাখা সে গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করে ঠিকাদারের লোকজন। এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং তুলে সাথেই রোলার করে আবার কাজ বন্ধ রাখেন ঠিকাদার।

কাজ বন্ধ থাকা সময়ে ঐ রাস্তায় নিয়মিত পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পানি না দেয়ায় রাস্তার ধুলা বালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে এলাকার বাসিন্দা সহ ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী জাবরহাট, বৈরচুনা ও সেনগাও ইউনিনেয়র কয়েক লাখ মানুষ। যান বাহনের ধুলায় রাস্তার দু’ধারের বসবাসকারীদের অনেকের শ্বাসকষ্ট সহ এজমা জনিত রোগে আক্রান্ত হন। এলাকার লোকজন আবারো ধরনা দেন কাজ বাস্তবায়নে নিয়োজিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরও দ্রুত কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য চিঠি দেন ঠিকাদারকে। এতেও ঘুম ভাঙ্গেনি ঠিকাদারের। অবশেষে ঠিকাদার তার মর্জি মত কয়েকদিন আগে কাজ শুরু করেন। রোলার করা কার্পেটিং এর উপরে পাথর-বালির ডাব্লিউ. ভি. এম. কাজে পাথরের সাথে বালু না মিশিয়ে মাটি মিশিয়ে কাজ করছেন। পানি, মাটি আর পাথরের ঐ মিশ্রন অন্যত্র থেকে ট্রাকে করে এনে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে।

এরপর রোলার করা হলে পুরো রাস্তা কাদায় ভরে যাচ্ছে। কাদা ভরা ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সমস্যায় পড়ছেন পথচারীরা। মিত্রবাটি গ্রামের মামুনুর রশিদ, সরকারপাড়ার দুলাল সরকার জানান, রাস্তাটি নিয়ে তারা চরম অসুবিধায় রয়েছেন। রাস্তার দু’ধার খুড়ে রাখার দীর্ঘদিন পর কাজ শুরু করা হলেও বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করায় রাস্তা কাদায় ভরে যাচ্ছে। সেই কাদা ছিটকে পড়ছে পধচারীদের শরীরে। নষ্ট হচ্ছে কাপড় চোপড়। সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। ঐ রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচলকারী বাদল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, জন গুরুত্বপুর্ন এ সড়কটির কাজ থেমে থেমে শুরু হলেও ইঞ্জিনিয়ার অফিসের গাফিলাতির কারণে ঠিকাদারের লোকজন অনিয়ম করার সুযোগ পাচ্ছে। এখানে দেখার কেউ নাই। আমাদের জনগনের কথা কে শুনে?।

এ বিষয়ে ঠিকাদারের মতামত জানতে আব্দুল মঈনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান আখতারুল ইসলাম বলেন, অনেকেই তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছেন।

কাজের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে না পারলেও উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ বলেন, ৯ এপ্রিল রবিবার তিনি এখানে নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। তার জানা মতে পাথরের সাথে বালু মেশানোর কথা। যদি তা না করা হয়, সোমবার পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।