ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে দেখা দিয়েছে যাত্রী সংকট
নেপালে ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার এই রুটে আকাশ পথে বাংলাদেশি যাত্রী কমে গেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। যাত্রী কমেছে অভ্যন্তরীণ রুটেও। তবে এই সংখ্যাটা খুব বেশি নয় বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন বিমান সংস্থার কর্মীরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে দুর্ঘটনার পর একটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বাকি দুটির যাত্রী বাড়েনি, উল্টো কমেছে ২০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ সার্বিকভাবে যাত্রী কমার হার ৪০ শতাংশের বেশি। যদিও একটি যদিও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে চান না কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্য, এটি দেশের স্বার্থের বিরোধী।
গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় দুই পাইলট, দুই জন কেবিন ক্রু এবং ২২ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৫১ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হন বাকিরা। এদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি, যাদের কয়েকজনকে এরই মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরেও পাঠানো হয়েছে একাধিক জনকে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পরদিন ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট দুর্ঘটনায় পড়া যাত্রীদের স্বজন এবং কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে নেপাল যায়। এরপর থেকে ইউ এস বাংলা এই রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
ইউ এস বাংলা ছাড়াও রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ ও বেসরকারি রিজেন্ট এয়ারলাইন্স ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আশীষ রায় বলেন, ‘এ ধরনের একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর এর চাপটা এসে পড়ে এয়ারলাইন্সের ওপরেই।’
‘কাঠমান্ডুর দুর্ঘটনায় পরিবারের শিশুটি হয়ত বলছে, বাবা প্লেনে চড়ব না। আবার হয়তো স্ত্রী বলছেন, তিনি বিমানে চড়তে চান না। তবে কাঠমান্ডু রুটে এর যাত্রী সংখ্যা কমলেও অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে এর প্রভাব খুবই সামান্য।’
আশীষ রায় বলেন, ‘সত্যি বলতে এর প্রভাব কতটা পড়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। মূলত আসন্ন গ্রীষ্মেই বোঝা যাবে যাত্রী সংখ্যা কতটা হ্রাস পেয়েছে।’
বাংলাদেশ বিমানের নাম প্রকাশের শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে আমাদের যাত্রী কমেনি বললে মিথ্যা বলা হবে। এ ধরনের দুর্ঘটনার পর শুধু এই রুটে নয়, বিশ্বের বহু দেশেই যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার নজির রয়েছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি বদলে যাবে।’
অন্য আরেক বেসরকারি এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা বলেন, তাদের কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট নেই। তাই এই রুটের বিষয়ে তাদের কোনো ভাবান্তর নেই। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে দুই থেকে তিন শতাংশের মতো যাত্রী কমেছে। এটা ধরার মতো কোনো বিষয় নয়।
এই দুর্ঘটনার কী প্রভাব-জানতে চাইলে ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘কাঠমান্ডুতে দুর্ঘটনায় অভ্যন্তরীণ রুটে তেমন একটা প্রভাব নেই। যাত্রী আগের মতোই আছে। কোনো ফ্লাইট বাতিলও হয়নি।’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক বৈমানিক ও বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এর সাবেক সভাপতি ক্যাপ্টেন নাসিম বলেন, ‘এত বড় একটি দুর্ঘটনার পর মানুষের মধ্যে প্রভাব পড়াই স্বাভাবিক ঘটনা। আবার আস্তে আস্তে মানুষ এটি ভুলে যাবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন