তফসিল ঘোষণার পর সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত : ইসি সচিব
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সভায় কমিশন জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত তফসিল ঘোষণার পর নেওয়া হবে।’ সোমবার (১৫ অক্টোবর) কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করতে না দেওয়ার অভিযোগে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সভা বর্জন করেন। তিনি ৫টি বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন বলে পরে সাংবাদিকদের জানান। এরমধ্যে সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টিও ছিল। এ বিষয়ে তালুদকার বলেন, ‘আগের জাতীয় নির্বাচনগুলোয় সেনা মোতায়েন হয়েছে। সেসব সেনা মোতায়েন হয়েছে, তা মূল্যায়ন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কীভাবে তাদের ব্যবহার করা যায়, তা নির্ধারণ করতে হবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন বিষয়ে মাহবুব তালুকদারের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেওয়ায় এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে সেনাবাহিনী কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে, তাদের কার্যপরিধি আগেই নির্ধারিত হওয়া উচিত।
নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা ভোটার তালিকা করে তা মাঠ প্রশাসনে পাঠিয়ে দিয়েছি। একইসঙ্গে কোন ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকলে তা ৩০ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনকে জানাতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন তফসিল ঘোষণার আগে এগুলো সংশোধন করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের গেজেট হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১০টির বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। মামলার গতিপ্রকৃতি জানানোর জন্য আইন শাখাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
ভোটকেন্দ্র বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোট কেন্দ্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে নির্বাচনের ২৫দিন আগে তার গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। বর্তমানে যে ভোটকেন্দ্র আছে, তার অতিরিক্তি ৫ শতাংশ কেন্দ্র চিহ্নিত করে রাখার কমিশন আজকের সভায় নির্দেশনা দিয়েছে। যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনোভাবে কেন্দ্র নষ্ট হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ওইসব কেন্দ্রে যেতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক আমন্ত্রণ জানানো হবে। সার্কভুক্ত নির্বাচন কমিশনারদের সংগঠন ‘ফেমবোসা’-কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। কমিশন আগামী সপ্তাহে বৈঠক করে অনুমোদন দেবে।
প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্বাচনি ফল সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হবে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, ‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের ফল সংগ্রহ করা হবে। এখানে বসে তা ঘোষণা করা হবে। অনলাইনে কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করবো, যেগুলোর মাধ্যমে দ্রুত ফল পেতে পারি।’
নির্বাচন উপলক্ষে শূন্যপদে পদায়ন দেওয়ার কথা জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচনের সময় প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী অফিসার পদায়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পদ যেন খালি না থাকে, সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারণে মাঠ প্রশাসনে, বিশেষ করে উপজেলায় আমাদের নির্বাচনি কর্মকর্তার পদ কিছু খালি থাকবে। সেসব ক্ষেত্রে অন্যান্য দফতরের সরকারি কর্মকর্তাকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবো।’ তিনি বলেন, ‘ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ রেখে এই প্যানেল তৈরি করার জন্য কমিশন বলেছে।’ আইন শৃঙ্খলা বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি, আট বিভাগে ৮টি ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য রাঙামাটিতে বিশেষ একটি সভা হবে বলেও তিনি জানান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন