তুরিনকে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা থেকে প্রত্যাহার
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)-এর সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) ও কারাগারে থাকা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজকে ট্রাইব্যুনালের সকল মামলা থেকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বুধবার (৯ মে) সচিবালয়ে এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি হলে মন্ত্রণালয় অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে।’
এদিকে বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমিতো আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাই না, বা তাদের মামলাও পরিচালনা করি না। কাজেই এ বিষয়ে আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। এটি মন্ত্রণালয় দেখবে। তবে প্রসিকিউর টিম ঢেলে সাজানোর কথা আমি সব সময় বলি।’
এ বিষয়ে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘গত ৭ মে চিফ প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে সংশ্লিষ্ট ওয়াহিদুল হকের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তারপর গত ৮ মে তাকে প্রসিকিউশনের সকল মামলা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটরের দুটি চিঠি এবং ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তার (তুরিন আফরোজ) সঙ্গে আসামির কথোপকথনের (গত ১৮ ও ১৯ নভেম্বরের) সিডিসহ যাবতীয় নথি বুধবার সকালে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে এ ধরনের ঘটনা আমাদের সকল প্রসিকিউটরকে অত্যন্ত মর্মাহত ও হতভম্ব করেছে।’
তুরিন আফরোজ অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগকে মিথ্যাচার বলেছেন। তাকে ট্রাইব্যুনালের কোনো দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার অভিযোগও অসত্য বলে দাবি করেছেন তিনি।
এর আগে প্রসিকিউটর ব্যরিস্টার তুরিন আফরোজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সকল মামলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মঙ্গলবার চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। সেইসঙ্গে তার কাছে থাকা ট্রাইব্যুনালের সকল মামলার ডকুমেন্টও জমাদিতে বলা হয়েছে আদেশে।
তার আগে গত ৭ মে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বলকে মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের মামলা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর ৮ মে প্রসিকিউশনের দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এনএসআইএয়র সাবেক ডিজি ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত চলছে। গত বছরের ১৯ নভেম্বর গুলশানের অলিভ রেস্টুরেন্টে তুরিন আফরোজ, তার সহযোগী ফারাবী, আসামি ওয়াহিদুল হক, তার স্ত্রী ও অন্য একজন মুরুব্বি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পৌনে তিন ঘণ্টার রেকর্ড ওয়াহিদুলের মোবাইলে ধারণ করা হয়।
এছাড়া আসামি ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ ও পৌনে তিন ঘণ্টার রেকর্ড প্রসিকিউশন কার্যালয়ে প্রাপ্তির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ার ভাবমূর্তি রক্ষা ও স্বচ্ছতার জন্য তুরিন আফরোজকে সকল মামলা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হলো।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে গত ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন