তৃণমূল বিএনপি’র নেতৃত্বে সাবেক বিএনপি নেতা শমসের-তৈমূর
জাতীয় সম্মেলনে তৃণমূল বিএনপির নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে।
এতে দলটির চেয়ারপারসন করা হয়েছে শমসের মবিন চৌধুরীকে। আর মহাসচিব করা হয়েছে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে।
তারা দুজনই বিএনপির সাবেক নেতা।
মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিলে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সম্মেলন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দেন তৃণমূল বিএনপির নেতারা।
ধারণা করা হচ্ছে বিএনপির সাবেক, নিষ্ক্রিয়, বহিষ্কৃত কিছু নেতা তৃণমূল বিএনপিতে ভিড়তে পারেন। এছাড়াও আরো কিছু নেতা অন্য দল থেকেও যোগ দিতে তৃণমূল বিএনপিতে।
তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পথচলা শুরু হলো শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারের। যোগ দেওয়ার দিনই দলটির প্রধান দুটি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপির প্রথম কাউন্সিল হয়। কাউন্সিলে শমসের মবিন চৌধুরীকে দলটির চেয়ারপারসন ও তৈমূর আলম খন্দকারকে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়েছে।
এই দুই নেতা এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একজন দল ছেড়ে চলে গেছেন। অন্যজন বহিষ্কার হয়েছেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও কূটনীতিক শমসের বিকল্পধারায় যোগ দেওয়ার আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন; দলটির কূটনৈতিক উইংয়ের দায়িত্বও সামাল দিতেন তিনি। আর গত নারারণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন করায় বিএনপি থেকে বহিষ্কার হন তৈমূর। ওই সময় তিনি দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে ছিলেন।
দলছুট ও বহিষ্কার হওয়ার পর দীর্ঘদিন এই দুই নেতার রাজনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়েনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তারা সক্রিয় হয়েছেন। যোগ দিয়েছেন বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল বিএনপিতে।
আজ থেকে তৃণমূলে তাদের আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু। তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছেন নাজমুল হুদার মেয়ে ও এতোদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসা অন্তরা হুদা।
মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তৃণমূল বিএনপির প্রথম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
কাউন্সিল ও কর্মী সমাবেশের দ্বিতীয় পর্বে আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন কাউন্সিলের সঞ্চালক ও দলের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. আক্কাস আলী খান। ২৭ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক জাতীয় নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করা হয়।
দলের প্রতিষ্ঠাতা নাজমুল হুদার মেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্তরা সেলিমা হুদা নতুন কমিটিতে এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন মো. আক্কাস আলী খান।
দলটির ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন—কে এ জাহাঙ্গীর মজমাদার, মেজর (অ) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেসুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার ও ছালাম মাহমুদ।
যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন—অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক, রোখসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ (ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদা) নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহসান।
সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন—শাহজাহান সিরাজ (বরিশাল), আকবর খান (চট্টগ্রাম)। এছাড়া সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মোড়ল, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে একে সাইদুর রহমান ও মো. রাজু মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কাজী ইব্রাহীম খলিল সবুজ, যুব বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে শাহাবউদ্দিন ইকবাল, আইন বিষরক সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক স্থপতি নাজমুস সাকিব, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সাগর ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ফরহাদ হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন।
কাউন্সিলে শমসের ও তৈমূরকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অন্তরা হুদা। তিনি বলেন, আমাদের মাঝে আজ উপস্থিত আছেন আমার বাবার প্রিয়ভাজন, আমার পিতৃতুল্য প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক জনাব শমসের মবিন চৌধুরী (বীর বিক্রম) এবং অপরজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে তাদের স্বাগত জানাই। তাদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও অভিভাবকত্বে আমার বিশ্বাস আমাদের দল আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমূল হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে দল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়। এর তিন দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান নাজমুল হুদা। তার মৃত্যুর পর ১৬ মে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার মেয়ে ব্যারিস্টার অন্তরা হুদা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন