তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বিশ্বকে বাঁচিয়েছিলেন যিনি

তিনি না থাকলে হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধটা লেগেই যেত। হতে পারত আরও একটি হিরোশিমা-নাগাসাকির ঘটনা। ৩৪ বছর আগে পরমাণু যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যেতে পারত আমেরিকা আর রাশিয়ার মতো দুটি বিশাল দেশ।
১৯৮৩ সালে সেপ্টেম্বরের এক রাতে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বিশ্বকে রক্ষা করেছিলেন সোভিয়েত সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা স্তানিসলাভ পেত্রোভ। সোভিয়েত বাহিনীর এই কর্তব্যরত অফিসার নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন বলেই রক্ষা পান দুদেশের অসংখ্য মানুষ।
এরপর বহু পুরস্কার ও সম্মান পেলেও জীবনের শেষ দিনে পেত্রোভ পেলেন না এতটুকু শ্রদ্ধা। একখানা স্যালুটও জানাল না কেউ।
নিজেকে কখনই হিরো ভাবেননি স্তানিসলাভ পেত্রোভ। তবু তার অনন্য কীর্তি জানার পর জনপ্রিয় হয়েছিলেন গোটা বিশ্বে। সবাই তাকে চিনত দ্য ম্যান হু সেভড দ্য ওয়ার্ল্ড নামে।
এমনকী তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল তথ্যচিত্রও। অথচ মারা গেলেন প্রায় নিঃশব্দে।
রাশিয়া আর আমেরিকার এক সময়ের রিয়েল লাইফ হিরোর মৃত্যুর খবর যখন দুই দেশের কাগজের শিরোনাম দখল করল, ততদিনে তার মৃত্যুর চার মাস কেটে গেছে।
গত ১৯ মে মস্কোর বাইরে একটি ছোট্ট শহরে মারা যান স্তানিসলাভ পেত্রোভ। পেত্রোভের এক জার্মান বন্ধুর লেখা ব্লগে প্রকাশ্যে আসে সেই খবর। পরে পেত্রোভের ছেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কী হয়েছিল ৩৪ বছর আগের সেপ্টেম্বরের সেই রাতে?
ওই সময় আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে চলছে ঠাণ্ডা যুদ্ধ। প্রতি মুহূর্তে বিপক্ষের পদক্ষেপে নজর রাখছে দুই দেশ। উপগ্রহ মারফত আসছে খবর। এমনই একসময় খবর আসে আমেরিকা আন্তর্দেশীয় পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। বেজে ওঠে অ্যালার্ম।
সেদিন দায়িত্বে ছিলেন পেত্রোভ। বিষয়টি কমান্ডারদের জানালেই আমেরিকার উদ্দেশে পাল্টা পরমাণু হামলা চালাত রাশিয়া। শুরু হয়ে যেত পরমাণু যুদ্ধ।
কিন্তু পেত্রোভ সম্পূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে বলেন, অ্যালার্মটি ঠিক নয়। ভুল করে বেজেছে। ফলে পাল্টা আক্রমণ না করে অপেক্ষা করেন কমান্ডাররা।
ফের বাজে অ্যালার্ম। এবারের সংকেত বলছিল, একটা নয় অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে আসছে রাশিয়ার দিকে। ওই অ্যালার্মকেও ভুল বলে কমান্ডারদের পদক্ষেপ করতে বারণ করেন পেত্রোভ।
এতখানি ঝুঁকি নেয়ার জন্য তাকে নানা বিরূপ মন্তব্য সহ্য করতে হয়। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হয়, ভুলই ছিল ওই অ্যালার্মগুলো। ফলে ভয়াবহ ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে যায় বিশ্ব। বিশেষ করে ক্ষমতাধর দুই দেশ আমেরিকা ও রাশিয়া।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















