দুই মেয়েকে ফিরে পেতে জাপানি মায়ের আপিল
বাবার কাছ থেকে দুই কন্যাশিশুকে ফিরে পেতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন জাপানি নাগরিক নাকানো এরিকো।
আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রোববার এই আবেদন (সিএমপি) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরান শরিফের হেফাজতে থাকবে বলে রায় দিয়েছিলেন। শিশুদের মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো তাদের সঙ্গে দেখা ও একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।
আদালত বলেন, যেহেতু মা জাপানি নাগরিক এবং সেখানে বসবাস ও কর্মরত। সে কারণে তিনি তার সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশে এসে প্রতিবার কমপক্ষে ১০ দিন সন্তানদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বছরে তিনবার বাংলাদেশে যাওয়া-আসাসহ ১০ দিন অবস্থানের যাবতীয় খরচ শিশুদের বাবাকে বহন করতে হবে।
আদালত আরও বলেন, অতিরিক্ত সময়ে যাওয়া-আসা বা বাংলাদেশে অবস্থানের খরচ মা নিজে বহন করবেন। শিশুদের বাবা মাসে অন্তত দুবার ছুটির দিনে শিশুসন্তানদের সঙ্গে তাদের মায়ের ভিডিওকলের মাধ্যমে কথা বলা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করবেন।
গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে অবস্থান ও যাতায়াত খরচ বাবদ আগামী সাত দিনের মধ্যে শিশুদের বাবা তাদের মাকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ লাখ টাকা দেবেন।
দুই শিশুকে ফিরে পেতে শিশুদের মায়ের করা রিটটি চলমান তদারকিতে থাকবে বলে উল্লেখ করেন আদালত। তৃতীয় সন্তানকে ফিরে পেতে শিশুদের বাবার করা রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, রিটটি (শিশুদের মা) চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে যে কোনো পক্ষ আদালতের এই আদেশ প্রতিপালিত না হলে বা অন্য কোনো আদেশ চেয়ে আদালতে আসতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট সমাজসেবা কর্মকর্তা দুই শিশুর দেখভাল অব্যাহত রাখবেন। প্রতি তিন মাস পর শিশুদের বিষয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই এরিকো নাকানো ও ইমরানের বিয়ে হয়। তাদের তিন মেয়েসন্তান। গত ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। এর পর ২১ ফেব্রুয়ারি ১০ ও ১১ বছর বয়সি দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি।
পরে ছোট মেয়েকে তার নানির কাছে রেখে গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো নাকানো। ইমরানের কাছ থেকে দুই শিশুকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ১৯ আগস্ট রিট আবেদন করেন তিনি। পরে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে আরেকটি রিট আবেদন করেন ইমরান। এরিকো নাকানো ও ইমরানের পৃথক রিটের ওপর ৩১ অক্টোবর শুনানি শেষ হয়। এর পর ২১ নভেম্বর রায় দেন আদালত।
রায়ের আগে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে দুই শিশু তাদের মা এরিকোর সঙ্গে গুলশানের বাসায় ছিল। শিশুদের বাবা ইমরান দিনের বেলায় তাদের সঙ্গে দেখা করে সময় কাটাতে পারতেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন