গত কয়েকদিন ধরে শরীরটা বেশ খারাপ যাচ্ছে। বারে বারে টয়লেটের চাপ হচ্ছে, আর সেখানে গেলে পটি ক্লিয়ার হচ্ছে না। এদিকে পেটও ফুলে-ফেপে আছে, সেই সঙ্গে দুর্গন্ধযুক্ত বায়ু প্রবাহ তো রয়েছেই।

এমন সমস্যায় আপনিও যে ভোগেননি, তা কিন্তু নয়। এ সমস্যা নিয়ে কখনও হয়তো অ্যালোপ্যাথি ওষুধও খেতে হয়েছে আপনাকে।

কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে? পটি পরিষ্কারের পাশপাশি গ্যাস-অম্বলের জ্বালা কমাতে বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি দারুণ উপকারে আসে।

তাই এবার থেকে পেট পরিষ্কার রাখতে গাদা গাদা ট্যাবলেট না খেয়ে একবার এসব সহজ পদ্ধতিগুলিতে কাজে লাগিয়ে দেখুন, উপকার পাবেন।

আসুন সেই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই;

মৌরি: মৌরি শুধু পেট পরিষ্কার করে না, সেই সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। আসলে ডায়জেস্টিভ ট্র্যাকের যে পেশি রয়েছে তার সঞ্চালন যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে মৌরি। ফলে বদ-হজম, পেট ফোলা, কনস্টিপেশন এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রমের মতো নানাবিধ রোগ একেবারে সেরে যায়।

এক্ষেত্রে এক কাপ মৌরি ভালো করে ভেজে গুঁড়ো করে নিয়ে একটা শিশিতে স্টোর করে রাখতে পারেন। প্রতিদিন এই গুঁড়ো মৌরি হাফ চামুচ করে গরম পানিতে গুলে খেলে নিমেষে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

লেবু: এতে উপস্থিত লেমোনাস, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি পেট পরিষ্কার রাখতে দারুণ কাজে আসে। তাই কখনও যদি দেখেন ১-২ দিন ধরে পটি ঠিক মতো হচ্ছে না তাহলে ঝটপট এক গ্লাস লেবুর রস খেয়ে নেবেন। দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে ফল পাবেন। এছাড়া গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

রেড়ির তেল: বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক রাখতে এই তেল দারুন কাজ করে। তাই তো প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১-২ চামুচ রেড়ির তেলে খেলেই দেখবেন পেট খালি করে পটি হয়ে যাবে।

মধু: প্রতিদিন মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলেই দেখবেন কনস্টিপেশন এবং পটি পরিষ্কার না হাওয়ার মতো সমস্যা একেবারে কমে যাবে। আসলে এ প্রকৃতিক উপাদানটিতে এমন কিছু রয়েছে, যা জোলাপের মতো কাজ করে। ফলে মধু খাওয়া মাত্র পটি পরিষ্কার হতে শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে দিনে ৩ বার, এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চামুচ করে মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে।

আঙুর: এই ফলটিতে উপস্থিত অদ্রবণীয় ফাইবার, পটি পরিষ্কার হতে সাহায্য করে। তাই বাওয়েল মুভমেন্ট ঠিক না হলেই দিনে হাফ বাটি কাঁচা আঙুর অথবা আঙুরের রস খাওয়ার চেষ্টা করুন। এমনটা করলেই দেখবেন সকালগুলো সুন্দর হয়ে উঠবে।

তিসি বীজ: এতে রয়েছে বিপুল পরিমাণে ফাইবার এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা পেট পরিষ্কার রাখতে নানাদিক থেকে সাহায্য করে। তাই পটি পরিষ্কার হোক, বা না হোক, প্রতিদিন তিসি বীজ গুঁড়া পানিতে গুলিয়ে পান করুন। দেখবেন দারুণ উপকার পাবেন। এছাড়া এক গ্লাস পানিতে ১ চামুচ তিসি বীজ গুলে কম করে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে পান করুন। দেখবেন সকালে উঠে পেট পরিষ্কার করে পটি হয়ে যাবে।

পালং শাক: প্রতিদিন এই শাকটি খেলে দারুণ উপকার পাওয়া যায়। তাই যদি কনস্টিপেশনের সমস্যা থাকে তাহলে হয় রান্না করে, নয়তো কাঁচা অবস্থাতেই পালং শাক খাওয়া শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই কষ্ট কমে যাবে।

এছাড়া আরেকভাবে পালং শাককে কাজে লাগানো যেতে পারে। এক গ্লাস পানির সঙ্গে ১ গ্লাস পালং শকের রস দিনে দু’বার করে খেলে পটি পরিষ্কার হবে।