দেশে এক বছরে দুই কোটি ৬১ লাখ মোবাইল উৎপাদন
বিগত এক বছরে দেশে ১৪টি কারখানায় দুই কোটি ৬১ লাখ মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বাজারজাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোাগযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিটিআরসি মিলনায়তনে স্থানীয়ভাবে মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্পে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। দেশীয় কারখানায় উৎপাদিত মোবাইল হ্যান্ডসেট এ পর্যন্ত দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৬৩ ভাগ পূরণ করছে। পাশাপাশি প্রায় ২৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
মোস্তাফা জব্বার জানান, সরকারের ডিজিটাল প্রযুক্তিবান্ধব নীতির ফলে ২০১৮ সালের পর থেকে দেশে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্রান্ডসহ ১৪টি কারখানায় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শুরু হয়। গত এক বছরে (২০২০-২১) টু-জি, থ্রি-জি, ফোর-জি এবং ফাইভ-জি মিলিয়ে মোট দুই কোটি ৬১ লাখ মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বাজারজাত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা ও নির্দেশনায় আমরা মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট উৎপাদক হয়েছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এবার রপ্তানিকারক হতে হবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দেশের ১৪টি মোবাইল কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল যন্ত্র আমদানিকারী দেশ থেকে বাংলাদেশকে উৎপাদন ও রপ্তানিকারী দেশে রূপান্তরের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনাসহ যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন ও এর বাস্তবায়নের ফলে মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ ডিজিটাল ডিভাইস আমদানিকারী দেশ থেকে উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশে রূপান্তর লাভ করেছে বাংলাদেশ।
গুণগত মানের সাথে কোনো প্রকার আপস না করে বিশ্বের সেরা মানের মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনে বিটিআরসির ভূমিকার প্রশংসা করেন মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, বিটিআরসি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মোবাইল তৈরির জন্য গুণগতমান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দেবে না। আমাদের সন্তানদের হাতেই বিশ্বের সেরা সেট আজ উৎপাদিত হচ্ছে। আমরা আমেরিকাতেও ফাইভ-জি সেট রপ্তানি করছি। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। আগামী দিনগুলোতে গুণগতমান অটুট রাখার বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং কারখানা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি ফোর জি মোবাইল হ্যান্ডসেট অধিক মাত্রায় উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কোভিডকালে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা ফোর-জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও রপ্তানি দেশের জন্য একটি অভাবনীয় অর্জন উল্লেখ করে বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মোবাইল সেটের খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মোবাইল শিল্প বিকাশে কারখানা মালিকদের প্রতিনিধিসহ বিটিআরসির নেতৃত্বে একটি কারিগরি কমিটি গঠণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, বিটিআরসি মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনসহ এই শিল্পের বিকাশে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজে করতে বদ্ধপরিকর।
মোবাইল কারখানার প্রতিনিধিরা এনওসি ও গ্রে মার্কেটসহ কতিপয় বিষয়ে তাবি উত্থাপন করলে মন্ত্রী তাদের বিষয়টি অতি দ্রুততার সঙ্গে বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন