দেহে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা
শীতকাল চলে আসছে। এ সময় সূর্যের আলো কম পাওয়া যায়। তাই পশ্চিমা দেশে বিশেষ করে শীত প্রধান দেশগুলোর স্বাস্থ্য সচেতন লোকজনকে ভিটামিন ডি নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। কারণ সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। ভিটামিন ডি শরীররে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে ভিটামিন ডি ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহায়তা করে। দেহের কঙ্কালতন্ত্র গঠনে ভূমিকা রাখে। ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিসসহ বেশ কয়েক ধরনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
এসব শুনে আবার ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করে দেবেন না। কারণ ভিটামিন ডি এর সঙ্গে সূর্যের একটি সম্পর্ক আছে সত্যি।
চর্ম বিশেষজ্ঞ ডা. স্টেফানি ক্যাপেলের মতে সূর্য থেকে অতিবেগুনি রশ্মি যাকে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি বলে, সেটি দেহের ত্বকে ঠিকরে পড়লেই ভিটামিন ডি সংশ্লেষ হয় অর্থাৎ ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর হিউমেন নিউট্রিশন এন্ড দ্যা চীফ অব দ্যা ডিভিশন অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এর অধ্যাপক ডা. ঝাওপিং লি বলেন, আপনি যদি দেহে সানস্ক্রিন জাতীয় লোশন মেখে বাইরে বের হন তবে আপনি দেহকে সূর্যের আলো থেকে বাঁচালেন সত্যি কিন্তু বঞ্চিত হলে ভিটামিন ডি থেকে। কারণ সানস্ক্রিন লোশন এখানে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
তাই বলে আবার সানস্ক্রিন মাখা বন্ধ করে দেবেন না। কারণ সানস্ক্রিন না মাখার কারণে চামড়া জনিত ক্যানসার হতে পারে। যা ভিটামিন ডি এর ঘাটতির চেয়েও মারাত্মক। তাই অল্প সময় রোদে থাকা ভালো। এতে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। যার উপকারিতা আপনি দীর্ঘদিন পাবেন।
দৈনিক পাঁচ মিনিট রোদে হাটা ত্বকের জন্য ভালো। আর বাকী সময় সানস্ক্রিনে মেখে থাকাটাও জরুরি।
যারা দীর্ঘদিন সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকেন কিংবা খুব একটা বাড়ির বাইরে বের হোননা তাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। তাই বলে আপনি সারাদিন রোদে থাকবেন তেমনটা নয়।
সূর্যের আলো বুঝবে না আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব কতটা। এজন্য আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডা. ব্রায়ান ফ্লিডম্যান বলেন, ভিটামিন ডি যে সূর্যের আলো থেকেই পেতে হবে তেমন নয়। বিভিন্ন খাবার থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যেসব অঞ্চলে বছরের অধিকাংশ অন্ধকার। সূর্যের আলো থাকে না, তাদের খাবার থেকে ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করতে হবে। ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে, ফোরটিফায়েড দুধ, মাশরুম, স্পিনাচ, মাছ। লাল মাংসে ও ভিটামিন ডি থাকে। কিন্তু এসব খাবারের আরেকটি ভয় আছে। এসব খাবারে আবার প্রচুর কোলেস্টেরল থাকে। যা আবার দেহের জন্য ক্ষতিকর।
ভিটামিনের ঘাটতি কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যায়। যেমন শরীর অবসাদগ্রস্ত হওয়া, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীর ক্যালসিয়াম নিতে পারে না। অর্থাৎ দেহ ক্যালসিয়ামের শোষণ ক্ষমতা হারায়। ভিটামিন ডি এর অভাবে ব্রেস্ট ক্যানসার, কোলোন ক্যানসার হয়। তাছাড়া হৃদযন্ত্রের অসুখ, মস্তিষ্কের সমস্যার সঙ্গে ভিটামিন ডি এর সম্পর্ক রয়েছে।
গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন ডি এর ঘাটতি থাকলে সদ্যজাত সন্তানের অ্যাজমার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
শরীরে ভিটামিন ডি দরকার কিনা তা জানা যায় রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে। চিকিৎসক বলে দেবেন তিনি ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাবেন কিনা। সূত্র: এনবিসি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন