দ্বিতীয় ক্যাঙ্গারু শিকারের অপেক্ষায় টাইগাররা

চট্টগ্রামের সাগরিকায় দ্বিতীয় ক্যাঙ্গারু শিকারের অপেক্ষায় আছে টাইগাররা। মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত প্রথম ওভারে উইকেটের যাত্রা করে বাংলাদেশ। ফিজের বল লেগ সাইড দিয়ে ম্যাট রেনশ’র ব্যাট ছুঁয়ে চলে যাওয়ার পথেই বাজপাখির মতো ছোঁ মারেন মুশফিকুর রহিম। দুর্দান্ত প্রচেষ্টার ফল হাতেনাতে পেয়েছেন টাইগার দলনেতা। ৪ রান করে বিদায় নিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার রেনশ। শেষ খবর পর্যন্ত ১ উইকেটে ৬১ রান করেছে স্মিথরা।

এর আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সম্বল ৩০৫ রান। প্রথম দিনের ৬ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিংয়ে নামে টাইগাররা। প্রথম সেশন শেষ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট খুইয়ে স্কোরবোর্ডে জমা করে আরও ৫২ রান। ফলে প্রথম ইনিংসে মুশফিক বাহিনীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩০৫।

ঢাকা টেস্টে ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ থাকলেও আজ কিছুটা লড়াই করেছেন নাসির হোসেন। প্রথম টেস্টে ২৩ ও শূন্য করা নাসিরের ব্যাট থেকে আজ ৪৫ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। নাসির আউট হওয়ার পরের ওভারেই বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওয়ার্নারের হাতে বল রেখেই দুই রানের জন্য দৌড় দেন মিরাজ। ভেবেছিলেন নিরাপদে পৌঁছতে পারবেন। কিন্তু জায়গা বদলের আগে পড়ে গেল স্টাম্পের বেল।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে আক্রমণে এসেই মুশফিকুর রহিমকে ফেরান নাথান লায়ন। ওজি স্পিনারের বলটা ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে মুশফিকের স্টাম্পে আঘাত হানে। ফলে ৬৮ করেই সাজঘরে ফিরতে হয় টাইগার দলনেতাকে।

দিনের প্রথম মুদ্রা লড়াইয়ে জিতে ব্যাটিংয়ে নামে টিম বাংলাদেশ। শুরুটা হয়নি আশানুরূপ। ঢাকা টেস্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা তামিম ইকবাল ফিরে যান সাতসকালেই। সেই চাপ কাটিয়ে উঠার আগেই ইমরুল কায়েসের বিদায়। দুই উইকেটই ঝুলিতে পুরেন নাথান লায়ন। চার নম্বরে ব্যাট করতে আসা মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কাটা মিটমাট করার চেষ্টা চালান সৌম্য সরকার। কিন্তু মধ্যাহ্ন ভোজনের ঠিক আগ মুহূর্তে সেই লায়নের ঘূর্ণিপাকে কাটা পড়েন সৌম্য। বিচ্ছেদ ঘটে সৌম্য-মুমিনুলের ৪৯ রানের জুটির।

বিরতির পর পরই ফিরে যান মুমিনুল হক। এরপর সুবিধা করতে পারেননি প্রথম টেস্টের নায়ক সাকিব আল হাসানও। লায়নের কুইকার ডেলিভারি মারতে গিয়ে ব্যাটে-বলে সমন্বয় হয়নি সাকিবের। ব্যাটের কানায় ঘেঁষে বল ততক্ষণে ম্যাথু ওয়েডের গ্লাভসে। সাকিবের বিদায়ে খানিকটা বিপাকে পড়ে টিম বাংলাদেশ।

টাইগারদের স্কোর তখন ৫ উইকেটে ১১৭। এমন নাজুক অবস্থায় যখন গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা উঁকি দেয় বাংলাদেশ শিবিরে, ঠিক তখনই ত্রাতার ভূমিকায় আগমন ঘটে সাব্বির রহমান আর মুশফিকুর রহিমের। তিল তিল করে ১০৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান এই মানিকজোড়।

শেষ বিকেলে আবারও ফণা তোলেন নাথান লায়ন। সামনের পায়ে ভর করে লায়নকে পুল শট খেলতে গিয়ে মনের অজান্তেই ক্রিজে পড়ে যান সাব্বির। সেই ফাঁকে স্টাম্প স্পর্শ করে ম্যাথু ওয়েডের হাত। অবশ্য নিজে তাল হারানোর আগে বাংলাদেশ দলের তাল ঠিক করে গেছেন ৬৬ রান করা সাব্বির। টেস্টকে ওয়ানডে বানিয়ে লড়াকু ব্যাটিংই করেছেন বাংলাদেশ দলের সুপারম্যান খ্যাত সাব্বির। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২৫৩ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১১৩.২ ওভারে ৩০৫ (তামিম ৯, সৌম্য ৩৩, ইমরুল ৪, মুমিনুল ৩১, সাকিব ২৪, মুশফিক ৬৮, সাব্বির ৬৬, নাসির ৪৫, মিরাজ ১১, তাইজুল ৯, মোস্তাফিজ ০*; কামিন্স ০/৪৬, লায়ন ৭/৯৪, ও’কিফ ০/৭৯, অ্যাগার ২/৫২, ম্যাক্সওয়েল ০/১৩, কার্টরাইট ০/১৬)