ধরাছোঁয়ার বাইরে গডফাদাররা, এখনো আসছে ইয়াবা
মিয়ানমার থেকে নাফ নদী ও সাগরপথে ইয়াবার চালান এখনো বাংলাদেশে আসছে। ইয়াবা প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান চললেও এটি বন্ধ হচ্ছে না। চলতি মাসে কক্সবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবির সদস্যরা দেড় লাখের বেশি ইয়াবা জব্দ করেছে। তবে এ সময় অন্য কোনো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইয়াবা জব্দ করতে পারেনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আসল গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ইয়াবা পাচার বন্ধ হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের পাঁচ মাসে (জানুয়ারি থেকে মে) কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ কোটি ৭২ লাখের বেশি ইয়াবা উদ্ধার করেছেন বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা। আর জুন মাসে আটক করা হয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ইয়াবা।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ ২ বিজিবির উপ অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, সীমান্তে জওয়ানরা গুরুত্ব সহকারে টহল দিচ্ছেন। এতে করে ইয়াবার চালান জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসে দুজন পাচারকারীসহ ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে, যা অন্য মাসের তুলনায় অনেকাংশে কম। বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারের জন্য মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থাপিত হয়েছে ৩৭টি কারখানা। মিয়ানমারের ৮ সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে এই ৩৭টি কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। মিয়ানমারভিত্তিক ১০ জন ডিলার ওইসব কারখানায় তৈরি করা ৩০ লাখের বেশি ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে টেকনাফের ডিলারের কাছে।
মিয়ানমারের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, মিয়ানমারের এই ৮ সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত ৩৭ ইয়াবা কারখানায় ১৩ প্রকার ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখের বেশি ইয়াবা তৈরি করে তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ইয়াবা এসওয়াই, জিপি, এনওয়াই, ডব্লিউওয়াই, গোল্ডেন, আর ২, আর ৭।
ইয়াবা বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রয়েছে মিয়ানমারের নির্ধারিত ১০ এজেন্ট। এর মধ্যে ৪ জনকে শনাক্ত করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। টেকনাফ থানার ওসি রণজিৎ কুমার বড়–য়া বলেন, এখনো ইয়াবার চালান পাচার হয়ে আসছে। তবে স্থলপথে ইয়াবাসহ পাচারকারীদের আটক করছে পুলিশ। নাফ নদী ও সাগরে অভিযান চালানোর নৌযান পুলিশের নেই। তবে আগের চেয়ে ইয়াবা পাচার অনেক কমে গেছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে চুনোপুঁটি ধরা হয়েছে, আসল কোনো গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা হয়নি। তাই ইয়াবা পাচার বন্ধ হয়নি, হবেও না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন