নওগাঁয় আপত্তিকর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় গৃহবধুর আত্বহত্যা

ফেসবুকসহ যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় লোক-লজ্জায় মিম আক্তার (১৭) নামে এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। মিমের সাবে স্বামী হেলাল উদ্দীন গত কয়েক মাস ধরে এই আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠেছে।

সোমবার (৪ নভেম্বর) বিষপান করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে মারা যায় মিমি। মিম নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে।

মিমের বাবা আসাদুল ইসলাম জানান,তার মেয়েকে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে একই উপজেলার আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদারের ছেলে মালোয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল সরদারের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। এর পর বিয়ের মাত্র এক মাসের মাথায় হেলাল আবারো বিদেশ চলে যায়। বিদেশ থাকাকালে মিমের সাথে ভিডিও কলে কথা বলার সময় নানান আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারন করে হেলাল।

এর পর পারিবারিক দ্ব›দ্ব-কলহের কারনে গত ৭জুলাই মিম -হেলালের মধ্যে সংসার বিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে বিদেশে থেকেই হেলাল ফেক আইডি খুলে ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি ফেসবুক,হোয়াটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে থাকে। এমনকি মিমের হোয়াটস আ্যপে এসব ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে তাকে উত্যক্ত করতে থাকে হেলাল।

ঘটনাটি পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য লোকজনকে জানিয়েছিলাম। গত চার দিন আগেও এমন ভিডিও মিমের কাছে পাঠিয়েছিল বলে জানান আসাদুল ইসরাম। শেষ পর্যন্ত লোক লজ্জায় সোমবার রাত ৮টার দিকে বিষ পান করে মিম। দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায়।

মিমের বাবা আসাদুল প্রামানিক আরো বলেন,আমার মেয়েকে হোয়াটস অ্যাপে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে বলতো তোর জীবন শেষ করে দিবো। অপমান ও অভিমানে মেয়েটা শেষ পর্যন্ত পৃথীবি থেকেই চিরবিদায় হয়ে গেল। আমরা সুষ্ঠু বিচার পেতে থানায় মামলা করবো জানিয়ে তিনি আরো বলেন,এঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাক,তাদের সবার কঠিন শাস্তি চাই।

বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও ছাড়া হচ্ছে এমনটি মিমের বাবা মৌখিকভাবে জানিয়েছিল। আমি হেলালের পরিবারকে ডেকে নিষেধ করেছিলাম।আজ (মঙ্গলবার) জানতে পারছি মিম আত্মহত্যা করেছে।

তবে এঘটনায় হেলাল বিদেশে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করতে না পারার কারনে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম বলেন, মিমের আত্মহত্যার ঘটনার খবর শুনেছি। তবে এখ নপর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।