নওগাঁর আত্রাইয়ে টেন্ডার ছাড়াই শতবর্ষি দু‘টি বটগাছ কাটার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
নওগাঁর আত্রাইয়ে টেন্ডার ছাড়াই শতবর্ষি দু‘টি বটগাছ কাটার অভিযোগ ওঠেছে আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে।ঐতিহ্যবাহী আহসানগঞ্জ হাটের প্রায় দুই লক্ষ টাকা মূল্যের গাছগুলো কাটা হয়েছে। চেয়ারম্যান বলছেন,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে রাস্তা নির্মান করার সার্থে গাছ কাটা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলছেন,গাছ নয়,গাছের ডাল কাটার কথা ছিল। এবিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাগেছে,আত্রাই উপজেলার মধ্যে সবচাইতে বড় পশুর হাট হচ্ছে আহসানগঞ্জ হাট। প্রায় দুইশত বছরের পুরোনো এই হাট স্থাপনের সময় সেই আমলে বট—পাকুড়,রেইন্টিকরইসহ বেশ কিছু গাছ রোপণ করা হয়। হঠা’ করেই হাটের পশ্চিম পাশ দিয়ে পার্শ্ব রাস্তা নির্মানের অজুহাতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মঞ্জুরুল আলম প্রায় দুই লক্ষ টাকা মূল্যের প্রাচীনতম দু‘টি বট গাছ ভোটের আগের দিন ৬জানুয়ারী কর্তন করেন।এসময় আরো কয়েকটি বট,পাকুড়,তেতুল ও নিমগাছের ডাল—পালাও কর্তণ করে নেন। এর মধ্যে একটি গাছ কেটে পুরোটাই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আরো একটি গাছ কাটার পর সমদয় ডাল—পালা সরিয়ে নিয়ে শুধু গাছের গুল ফেলে রাখা হয়েছে।শতবর্ষি গাছগুলো কর্তন করতে দেখে এলাকার সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
আহসানগঞ্জ বাজারে আসা প্রায় ৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধ আকালু প্রামানিক জানান,আমরা জন্মের পর থেকেই এই গাছগুলো দেখে আসছি। হাটের চারে দিকে এবং মাঝে মধ্যে রোপণ করা গাছগুলোই হাটুরেদের মুগ্ধ করে রাখে। এসব গাছ রক্ষা না করে কেটে ফেলা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। তিনি প্রাচীনতম এই গাছগুলো রক্ষার দাবি জানান।
ফেরদৌস হোসন (৩৫) নামে এক যুবক জানান,নতুন রাস্তা নির্মানে গাছগুলো কোন বাধা নয়। সরকার যেখানে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় গাছ রোপনের উদ্যোগ নিয়েছেন সেখানে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই রাস্তা নির্মানের অজুহাতে তরুতাজা প্রাচীনতম এই বট—বৃক্ষগুলো রক্ষা না করে কেটে ফেলা হলো। গাছ কাটার সাথে জরিতদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
ওই হাটের কাঠ ব্যবসায়ী ইচাহক আলী বলেন,এলাকার সরকারী কোন গাছ টেন্ডার হলে ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদেরকে চিঠি দিয়ে অবগত করানো হতো। কিন্তু আমাদেরকে না জানিয়েই প্রায় দুই লক্ষ টাকা মূল্যের এই গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই কাটা হয়েছে।
গাছ কর্তন কাজে নিয়োজিত উপজেলার দাড়িয়াগাঁথি গ্রামের জহুরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন,চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের নির্দেশে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
এব্যাপারে আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মঞ্জুরুল আলম বলেন,নতুন রাস্তা নির্মানে গাছগুলো সমস্যা হচ্ছিলো। তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান প্রামানিকের সাথে কথা বলে গাছগুলো কাটা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান বলেন,গাছের ডাল কাটার কথা বলা হয়েছিল। পরে রাস্তায় মাটি ফেলতে সমস্যা হওয়ায় গাছই কেটে ফেলেছে।
আত্রাই উপজেলা ইউএনও সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন,রাস্তা নির্মানে বড়জোর গাছের ডাল পালা কাটতে পারে। কিন্তু গাছ কাটতে পারেনা। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন