নওগাঁর মান্দায় ইজারাদারের বিল পাহারার ঘর পুড়িয়ে দিয়ে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা
নওগাঁর মান্দা উপজেলার আন্ধারসুরিয়া বিলের পানি ব্যবহার করে চারপাশের অন্তত ৩ হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন কয়েক গ্রামের কৃষকেরা। কিন্তু সেই পানি শিবনদের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বিলের ইজারাদার।
এরই মধ্যে খননযন্ত্র দিয়ে বাঁধের বেশকিছু অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পরও বাঁধ কাটা বন্ধ করেননি ইজারাদারের লোকজন। অবশেষে আজ বুধবার সকালে বিল পাহারা দেওয়ার ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে এলাকার বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা।
কৃষকদের দাবি, এ বিলের পানি ব্যবহার করে চারপাশের অন্তত ৩ হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন বাঁকাপুর, ভেড়ি দুর্গাপুর, চাকদহ, খাগড়াসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের কৃষকেরা। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে বিলের পানি সরিয়ে নেওয়া হলে এসব জমিতে বোরো ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বর্ষা মৌসুমে চরম ঝুঁকিতে পড়বে শিবনদের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আন্ধারসুরিয়া বিল ৩ বছরের জন্য ইজারা নিয়েছে দক্ষিণ গোয়ালি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামের একটি সংগঠন। এ সমিতির কাছ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল এলাকার শরিফুল ইসলাম বিলের সাবলীজ নিয়ে মাছ চাষ করেন। বর্তমানে বিলের পানি অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় বিলের পানি শুকিয়ে মাছ ধরার পাঁয়তারা করছেন ইজারাদার শরিফুল ইসলাম।
বাঁকাপুর গ্রামের কৃষক কমল মণ্ডল বলেন, খননযন্ত্র দিয়ে এরই মধ্যে বিলের ভেতর থেকে খাল খনন করে বাঁধ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। এখন বাঁধ কেটে সেই পানি শিবনদে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ইজারাদার। পানি শুকিয়ে গেলে বিলে বোরো ধানের চাষ করতে পারবেন না তাঁরা।
চাকদহ গ্রামের কৃষক মুক্তিযোদ্ধা কামিজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, বিলের পানি ব্যবহার করে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ বোরো ধানের চাষ করেন। এটিই তাঁদের একমাত্র ফসল। বর্ষা মৌসুমে বিলে থইথই করে পানি। তখন মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এলাকার লোকজন। এলাকার কৃষকদের বাধা উপেক্ষা করে বিলের সেই পানি সরানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
ইজারাদারা শরিফুল ইসলাম বলেন, বিলে এখনও অনেক পানি। পানি কমাতে না পারলে মাছ ধরা যাবে না। তাই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে বোরো আবাদে কোনো প্রভাব পড়বে না।
ইজারাদার অভিযোগ করে বলেন, ‘বুধবার সকালে বিলের পাহারায় থাকা লোকজন চৌবাড়িয়া বাজারে নাস্তা করতে যান। এ সুযোগে এলাকার লোকজন পাহারাঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন