নবীনদের নিয়ে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভা : ‘নতুন করে শুরুর চেষ্টা?’

বাংলাদেশে রাষ্ট্র পরিচালনায় এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় থাকছেন ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী। যাদের মধ্যে ২৭ জনই মন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ।
দেখা যাচ্ছে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাদ দিয়েছেন বেশ কিছু প্রবীণ নেতাদের।
এবারের মন্ত্রী সভায় নেই আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরীর মতো আওয়ামী লীগের বেশ কিছু পুরনো মুখ। বাদ পড়েছেন মোহাম্মদ নাসিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নুর ও মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার মতো পুরনো নামও। মনে হচ্ছে যেনও একটি প্রজন্ম একসাথে বাদ পড়লো।
শ ম রেজাউল করিম নতুন মন্ত্রীসভার একজন। দায়িত্ব পেয়েছেন গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রনালয়ের। এবার প্রথমবারই সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি বলছেন, “রাজনীতিতে আমি নতুন নই। রাজনীতিতে আমরা অনেক চড়াই উৎরাই রয়েছে। অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারও কম সমৃদ্ধ নয়। তবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমি নতুন। কিন্তু যেহেতু আমি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পছন্দ করি, তাই কাজ করতে আমার কোন বাধা হবে বলে আমি মনে করি না।”
মি. করিম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক। অর্থাৎ দলে একদম নতুন নন। তবে প্রশাসনে নতুন।
কিন্তু যারা বাদ পড়েছেন তাদের ছাড়া দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে ভাবা যায়না। অভিজ্ঞ প্রবীণ নেতাদের বাদ দিয়ে শেখ হাসিনা যে ধরনের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন তা ঠিক কী বার্তা দিচ্ছে?
জিজ্ঞেস করেছিলাম মন্ত্রীসভা থেকে বাদপড়া এমনই একজন প্রবীণ নেতা, শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য বিদায়ী আমির হোসেন আমুর কাছে।
তিনি বলছেন, “এত বড় দল, বিভিন্ন স্তরে, পর্যায়ে নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আমরাতো আর চিরদিন থাকবো না। আমাদের সিনিয়র যারা ছিলেন তারাও তো এখন নেই। আওয়ামী লীগতো ক্ষমতায় আছে। আরও কয়েকবার আসতে পারে। সুতরাং সেই সময় যাতে কিছু অভিজ্ঞ লোক দাড়িয়ে যাতে দাড়িয়ে যায় যারা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনা করতে পারবে। একটা পর্যায়ে তো এদেরই হাল ধরতে হবে। সেই সুযোগটাই বোধ হয় করে দেয়া হলও।”
শ ম রেজাউল করিম মনে করেন, “নতুনদের কর্মশক্তি দিয়ে একটি পরিবর্তনের দিকে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন যারা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করার জন্য উপযুক্ত। অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। কারো কারো বয়স হয়েছে। নতুনদের যদি অভিজ্ঞ করে তোলা না হয়, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের এই জাতীয় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকেরওতো একসময় সংকট হতে পারে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করেন সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তনের ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটেছে এই মন্ত্রিসভায়।
তিনি বলছেন, “একটা জিনিস খেয়াল করুন এই মন্ত্রিসভায় যারা আছেন তারা প্রত্যেকেই শেখ হাসিনার থেকে বয়সে ছোট। দুটো জিনিস খুব পরিষ্কার যে তিনি তরুণদের হাতে মন্ত্রীত্বের অধিকাংশ দিয়ে তিনি একটা নতুন শুরুর চেষ্টা করছেন।”
তার মতে, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারকে যে সমস্ত উন্নতি করতেই হবে, সেটা ইশতেহার অনুযায়ী হোক আর মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হোক, অথবা নির্বাচন যেটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে নানা কারণে, এই নির্বাচন যে সরকারের দুর্বলতার প্রতিফলন করে না সেটা প্রমাণ করার জন্যই হোক, অনেক কারণে তাদের উন্নয়নের এবং গতিশীলতার, স্বচ্ছতার, জবাবদিহিতার পরিমাণটা বাড়াতে হবে। সেই কারণে হয়ত এমন নতুন যাত্রার সূচনা।”
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















