নরসিংদীতে দুর্নীতির অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল
নরসিংদীতে ডিসি অফিসের চুতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুল জলিল এখন পাসপোর্ট অফিসের প্রধান দালাল। সাম্প্রতি তার এই কু-কৃর্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এমনকি স্থানীয় প্রতিকায় “মিনি পাসপোর্ট” নামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। ইদানিং অপরাধ নামে একটি ফেসবুকেও তার এই দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে।
এদিকে নরসিংদী আদালত প্রাঙ্গনে সোনালী ব্যাংকের নিচে বীর মুক্তিযোদ্ধা চায়ের দোকানের পাশে তার মিনি পাসপোর্ট কার্যক্রম চলমান হয়েছে। অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় যে, এই মিনি পাসপোর্ট অফিসে আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে তিনজন কর্মচারী রয়েছে পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু রাখার জন্য।
সম্প্রতি সময়ে ঢাকা থেকে সংবাদ কর্মীরা জেলা প্রশাসকের নিকট মোবাইল ফোনে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস হয়রানি ও ভোগান্তিমুক্ত পরিবেশে পাসপোর্ট সরবরাহের নানা উদ্যোগ নিলেও পদে পদে বাধা রয়েই গেছে। এক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে সরকারি নির্ধারিত ফি’র দ্বিগুণ নিয়ে ভুল ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট দিচ্ছে এ দালাল চক্র। পাসপোর্ট পেতে গ্রাহক ভেরিফিকেশন করে দেওয়ার কথা বলে পুলিশের নাম ব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। টাকা ছাড়া ভেরিফিকেশন হয় না বলে জানায় দালাল চক্রটি। সত্যায়নের নামেও হয়রানি করা হয়। এ ছাড়া পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের অভাব, অবকাঠামোগত নানা সমস্যার জন্য গ্রাহকের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ঢাকা থেকে আমাদের একদল সংবাদকর্মী গেলে তারা সরেজিমেন গিয়ে দেখে যে, নরসিংদী জেলার পাসপোর্ট অফিসের প্রধান দালাল হচ্ছে ডিসি অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী আব্দুল জলিল। তার খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে বিশাল বিশাল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যে দীর্ঘ দিন যাবৎ ডিসি অফিসে কাজ করার নামে তার অসাধু কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রীতিমত সে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচে একটি ছোটখাট পাসপোর্ট অফিস বানিয়ে রাখছে। তার অধীনে প্রায় ৫/৬ জন কর্মচারী রয়েছে শুধুমাত্র পাসপোর্ট ফাইল পূরণ করার জন্য। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, সে অনেক গরীব, দুঃখী মানুষের কাছ থেকে পাসপোর্ট করে দিবে বলে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সে বর্তমানে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে ০৭ পর্বের ধারাবাহিক সংবাদের মধ্যে দ্বিতীয় পর্ব এটি। তিনি একাধিক সম্পত্তির মালিক রয়েছেন। শুধু তাই নয় নরসিংদী উপজেলা মোড় একটি জমি কিনেছে। উক্ত জমি নিয়েও দন্দ চলছে বলে জানা গেছে, তার বিষয়ে কোথায় কোথায় কি কি রয়েছে তা আগামী সংখ্যায় ধাপে ধাপে তোলে ধরা হবে।
এ বিষয়ে নরসিংদী ডিসি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আব্দুল জলিলকে সংবাদকর্মী রুদ্র এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি তার কু-কৃর্তি দামাচাপা দেওয়ার জন্য গোপনে বসার প্রস্তাব দেয়।
এদিকে কোর্ট এলাকার ব্যবসায়ী তার পরিচয় গোপন রেখে সংবাদ কর্মীদের সাথে বলেন যে, আব্দুল জলিল নিজেকে ডিসি অফিসের স্টাফ বলে পরিচয় দেয় বিভিন্ন জায়গায়। অথচ তিনি একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। তার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসক মহোদয় আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান এর নিকট সংবাদকর্মীরা মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আসার পরে শুনিনি। যেহেতু আপনি বলেছেন আমি এই বিষয়টি অবশ্যই দেখবো ও প্রয়োজনে আপনারা সঠিক প্রমাণাদি নিয়ে আমার কাছে আসুন আমি যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে আব্দুল জলিলকে রায়পুরা উপজেলায় তাতক্ষনিক বদলি করে দেওয়া হয়েছে। বদলী করলেও থেমে নেই তার পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম।
এ বিষয়ে জেলা পর্যায়ের কিছু সংবাদকর্মীদের নিকট জানতে চাইলে, তারা অনেক কিছু জেনেও এড়িয়ে যান। যেহেতু তারা স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করেন তাই স্থানীয় সংবাদকর্মীরা নিজেদের মান সম্মানের ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। কারণ এই দালাল চক্র অনেক শক্তিশালী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন