নরসিংদীতে বাঁশের হস্তশিল্প আবারো জাগরণে

নরসিংদী জেলা হস্তশিল্পে বেশ সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্য ছিল। এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কারশিল্পী ছিলেন, যারা বংশ পরম্পরায় এই পেশায় জড়িত ছিলেন। তাদের তৈরি পণ্যের গুণগতমান মান খুব ভালো ছিল। কিন্তু বাজারে আকর্ষণীয় নকশার প্লাস্টিক সামগ্রী সহজলভ্য হওয়ায় বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের চাহিদা একদম কমে যায়।

ঐতিহ্যবাহী সেই হস্তশিল্পের আবারো জাগরণ ঘটছে নরসিংদীতে। সিনথেটিক দ্রব্যাদি ব্যবহারে ক্ষতিকর প্রভাব বুঝতে পেরে সাধারণ মানুষ এখন ওইসব দ্রব্যাদি ব্যবহারের পরিবর্তে বাঁশ ও বেতের তৈরি হস্তশিল্পের ব্যবহারে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন।

মূলত: গ্রামে বসবাসকারী কারশিল্পীরা এখন বাঁশ ও বেত ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প তৈরি করছেন। এই পেশায় এসে তাদের অনেকেই বর্তমানে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেকার যুব মহিলা, দুস্থ নারী ও বিধবা মহিলারাও এখন এই পেশায় সংযুক্ত হয়েছেন। এই কাজে তারা প্রমাণ করেছেন দারিদ্র্যবিমোচন ও গ্রামাঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকারে জন্য হস্তশিল্প একটি কার্যকর পেশা। প্রাইভেট সেক্টরের উদ্যোক্তারাও বেশি চাহিদা ও জনপ্রিয় হস্তশিল্প সামগ্রী উৎপাদন করছেন।

জেলার বেলাবো উপজেলার পাতুলি ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তা শেফালী বেগম (৫০) ও তার ২০ বছর বয়সী কন্যা পারল বেগম ফলের ট্রে, ফুলদানির ঝুড়ি, মোড়া, এসট্রে, বাঁশিসহ বাঁশের তৈরি চমৎকার হস্তসামগ্রী তৈরি করে হারানো আভিজাত্য পুনরদ্ধারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
শেফালীর মতো শিবপুর ও রায়পুরা উপজেলার গ্রহিণী হাবিবা, ফাতেমা, বিনা রানী, বিধবা কোহিনূর, সোফিয়া ও তরণী হোসনা ও মিনতি দাস বাসসকে তাদের জীবনের গল্প উল্লেখ করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তারা বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

শেফালী ও অন্যান্য উদ্যোক্তারা গত কয়েক বছর ধরে ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থানে বাঁশ ও বেতের বিভিন্ন ধরনের হস্তশিল্প তৈরি ও সরবরাহের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্ডার পাচ্ছেন।