নরসিংদীর মনোহরদীতে সাংবাদিক পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন
নরসিংদীর মনোহরদীতে সাংবাদিক পরিচয়ে আব্দুল মান্নান ঢালী নামে এক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্মানহানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার বড়চাপা ইউনিয়নের চরতারাকান্দী বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করেন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ও এলাকাবাসী।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বড়চাপা ইউনিয়নের চরতারাকান্দী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের গ্রুপ কমান্ডার এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ছিলেন। কথিত ওই সাংবাদিকের নাম কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল। সে নাম সর্বস্ব একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক বলে জানা গেছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ঢালী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কাউসার রশিদ বিপব, স্থানীয় ইউপি সদস্য জুলহাস উদ্দিন প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, কথিত সাংবাদিক শাকিল একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে অসম্মান ও অপমান করেছে। সে তার ভাতা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। সে একজন রাজাকারের ছেলে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
এর আগে এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ঢালী নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ সুপার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ও নরসিংদী প্রেসক্লাবে এই অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়।
অভিযোগে আব্দুল মান্নান ঢালী উল্লেখ করেন, ১৫ জুলাই দুপুরে কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলের ব্যক্তিগত মুঠোফোন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ঢালীর মুঠোফোনে একটি কল আসে। এসময় শাকিল বলেন, আপনার (মান্নান ঢালী) বিরদ্ধে অভিযোগ আছে। আপনার মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। অতি তাড়াতাড়ি আমার (শাকিল) সঙ্গে দেখা করেন। তার কথা মতো ঐদিন উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে তাকে ফোন দিলে তিনি নিজেকে সাংবাদিক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল বলে পরিচয় দেয়। এছাড়া তিনি মনোহরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেও পরিচয় দেন।
এসময় দ্রত মনোহরদী প্রেসক্লাব কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ঢালী সেখানে গিয়ে দেখা করার পর শাকিল জানান তিনি নাকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।
তবে কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলের দাবি একটি কুচক্রী মহল সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তাঁর বিরদ্ধে এ ধরণের ষড়যন্ত্র করে আসছে।
এর আগে ২০১৭ সালে কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলের বিরদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হয়রানি ও তাঁর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ঐ সময় তিনি নিজেকে সাংবাদিক, আইনজীবী পরিচয় দিয়ে চালাকচর ইউনিয়নের হাফিজপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. সাফিউদ্দিনকে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়াও তার বিরদ্ধে নানা হয়রানির অভিযোগ এনে থানায় এবং আদালতে একাধিক অভিযোগ করেছিলেন একই উপজেলার খিদিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিল ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন।
স্থানীয়রা জানান, শাকিল মাদক ও আইসিটি আইনের দুই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাগারে ছিলেন।
এ ছাড়া ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মনোহরদী থানার সামনে থেকে ২৫টি ইয়াবাসহ শাকিলকে গ্রেপ্তার করেছিল ডিবি পুলিশ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন