ভার্মি কম্পোস্ট ভিলেজ ঝিকরগাছার বারবাকপুর ও বোধখানা
‘নারী উদ্যোক্তাদের বছরে ১০০ মেট্রিকটন সার উৎপাদন’
কৃষিশুমারি ২০১৯ অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশে মোট ৯৮.৬৬% পরিবার পল্লী এলাকায় বসবাস করে। যার মধ্যে ৫৩.৮২ শতাংশ কৃষি পরিবার। শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুযায়ী ৭২.৬ শতাংশ গ্রামীণ নারী কৃষিকাজের সাথে জড়িত।
এছাড়াও পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশের মোট পরিবারের মধ্যে ৪০ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯ খানার নিজস্ব কোনো জমি নেই। শতকরা হিসাবে এ সংখ্য ১১.৩৩%। বর্গাচাষ অথবা অর্থের বিনিময়ে অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে এমন পরিবারের সংখ্যা ৬৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮৭, যা মোট পরিবারের ১৯.০৩%। দেশে মোট ১৬ লাখ ৫ হাজার ১৮৫ খানার মৎস্য চাষের জমি রয়েছে, যা মোট পরিবারের ৪.৫২%। শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন ২০১৬-১৭ অনুযায়ী, কৃষিতে গ্রামীণ নারীর অংশগ্রহণ ৭২.৬ শতাংশ।
নারীরা শুধু ফসল কাটার পর নয়, উৎপাদনের সর্বস্তরের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন, জুম চাষ, মৎস্য চাষ, জৈব কৃষি, কেঁচো সার ইত্যাদির চর্চা করছেন। কৃষি খাতের ২১ ধরনের কাজের মধ্যে ১৭টিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। এদিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কয়েকশো নারী উদ্যোক্তার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে জৈব কৃষি। এছাড়াও কৃষি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৬’ পেয়েছেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বোধখানা ব্লকের নারী উদ্যোক্তা নাসরীন আক্তার।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এই ব্লকে বর্তমান ২৯৫ জন নারী ২ হাজার চাড়িতে বছরে ১০০ মেট্রিক টন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করছেন। এ ছাড়া চালা কম্পোস্ট পদ্ধতিতেও সার তৈরি করছেন তারা। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে অন্তত আরও ১০০ জন নারী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করছে।
সরেজমিনে নাসরিন আক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘নিজেদের প্রচেষ্ট ও কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিনি প্রতি মাসে নিজের জমিতে জৈব সারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার সার সারাদেশে বিক্রি করছেন। এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরির জন্য কেঁচো বিক্রি করেও ভালো আয় করছেন।
উপজেলার বোধখানা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আয়ুব হোসেন বলেন, ‘ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত সব ধরনের প্রযুক্তি ও কারিগরী সহায়তা আমরা উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বিনামূল্যে সরবরাহ ও সম্প্রসারণ করছি।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় জৈব সারের বিকল্প নেই। কৃষি বিভাগের মাধ্যমে আমরা ভার্মিকম্পোস্ট এর চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সব ধরনের আর্থিক, কারিগরী ও প্রযুক্তি সেবা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি। ফুলের জন্য যেমন ঝিকরগাছা সম্বৃদ্ধ তেমনি অচিরেই জৈব কৃষির জন্য ঝিকরগাছা পরিচিতি লাভ করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন