নির্বাচন অবাধ করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রশাসনের : সিইসি
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2017/10/cec_nurul_huda_bnp_zia.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রশাসনের ওপর। নির্বাচনী কর্মকর্তারা আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। এর বাইরে কোনো কিছু নেই। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের বেজমেন্ট-২ এ ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে এক সভায় সিইসি এসব কথা বলেন।
সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বরত বিভিন্ন বাহিনীর প্রতিনিধি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত রয়েছেন।
ইসি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রশাসনের ওপর। নির্বাচনী কর্মকর্তারা আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল। এর বাইরে কোনো কিছু নেই। সেটা হলো একজন ভোটার ভোট দিতে যেতে পারবেন। তিনি কোনো বাধার সম্মুখীন হবেন না। যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিতে পারবেন এবং ভোট দিয়ে তিনি আবার নিরাপদে বাড়িতে ফিরে যেতে পারবেন। এর মধ্যে তিনি কোথাও বাধার সম্মুখীন হবেন না। অবাধে যেতে পারবেন কেউ বাধা দেবে না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, একটি বিষয়ে সতর্ক করে বলতে চাই, আপনারা যেমন সাহায্য-সহযোগিতা করেন। আবার যদি কেউ ব্যত্যয় ঘটান, যদি তার দায়িত্ব পালন না করেন, গাফলতি করেন, তাহলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে, কঠোরভাবে। আমাদের হাতে যে আইন আছে, সরকার যে আইন আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে সেই আইনে প্রত্যেকের দায়িত্ব নির্ধারিত আছে। সেই নির্ধারিত দায়িত্বের ব্যত্যয় যদি কেউ করে তাহলে আমরা আইনের মাধ্যমেই তার ব্যবস্থা নেব। কমিশন এই ব্যাপারে এতোটুকু আপোস করবে না।
তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে। তাতে আমরা খুব খুশি। আমাদের লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া। আর এটা প্রকাশ হবে আমাদের নির্বাচনী যে অঙ্গীকার, নির্বাচনে আপনাদের যে ভূমিকা তার সফল বাস্তবায়নের ওপর। এটা আপনাদের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি। নির্বাচন অবাধ হবে, গ্রহণযোগ্য হবে, বিশ্বাস যোগ্য হবে এবং স্বচ্ছ হবে।
স্বচ্ছতা বলতে আমাদের কর্মকাণ্ডগুলো পরিষ্কার করা, দৃশ্যমান করা। আমাদের কোনো কাজ গোপন নয়। গোপন শুধু গোপন ভোটকক্ষে গিয়ে ভোটারদের ভোট দেয়া। এটা ভোটারদের বিষয়, তারা কাকে ভোট দেবে। এ ছাড়া নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে আপনার আমার সব কাজ সবাই দেখতে পারবে, বুঝতে পারবে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কোনো বাধা ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং ভোট দিয়ে তারা নিরাপদে বাসায় যাবে এটা নিশ্চিৎ করতে হবে। সব প্রার্থী যাতে সমান সুযোগ পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে- যোগ করেন সিইসি।
সিইসি আরো বলেন, ভোট গণনার সময় যাদের দেখা দরকার তারা দেখবেন। তাছাড়া ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শুরু সময় ব্যালট পেপার ও বাক্স সবাই দেখবে যাতে কারো কোনো সন্দেহের অবকাশ না থাকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পর্কে সিইসি বলেন, কেন্দ্রে কোনো রকম ঝামেলা হবে না। কোনো রকমের হাঙ্গামা হবে না। ভোট দিতে কাউকে বাধা প্রদান করা হবে না এবং সেখানে যে ভোটাররা যাবেন তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
সিইসি আরো বলেন, ব্যক্তি হিসেবে আমরা নিরপেক্ষ না থাকতে পারি। কিন্তু দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে আমাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। যখন আমরা কোনো দায়িত্বপালন করি, তখন আর আমাদের কোনো পক্ষ থাকে না।
নির্বাচন তখনই বিশ্বাসযোগ্য হবে যখন আপনি দেখাবেন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কতখানি স্বচ্ছতা আছে, সুষ্ঠু হলো, কতখানি নিরপেক্ষ হলো তার ওপর। ভোটারদের বিশ্বাসযোগ্যতা, প্রার্থীদের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং নাগরিকদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এভাবে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত যদি আমরা স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্বপালন করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারি তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কারো দ্বিমত থাকবে না। নির্বাচন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত সবাইকে আইন ও বিধি অনুযায়ী যার যার দায়িত্ব পালন যদি আমরা করি তাহলে নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। প্রত্যেকটা নির্বাচনকে আমরা সুষ্ঠুভাবে ও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমাদের একটা অবস্থান সৃষ্টি করার ব্যাপারে সাহায্য করেছে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আমরা উদাহরণস্বরূপ তুলে ধরি। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানান সিইসি।
সিইসি আরো বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর যতগুলো স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। তার সবগুলোই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সু্ষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার আগ্রহ, তাদের দক্ষতা এবং তাদের একাগ্রতায় আমরা অভিভূত। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও যেসকল নির্বাচন হবে, সেগুলো মাধ্যমে আমাদের অবস্থান আরো দৃঢ় ও সুপ্রতিষ্ঠিত হবে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন