নির্বাচন নিয়ে বেকায়দায় বিএনপি, সুযোগ নিতে চায় জাতীয় পার্টি
বিএনপি ভোটে আসছে না -এমনটা ধরে নিয়েই জাতীয় পার্টি তাদের আগামী নির্বাচনের ছক কষছে। আর এ কারণেই অতি সম্প্রতি দলটি ৩শ’ আসনে এককভাবে প্রার্থী দেয়ার কথা জোরেশোরে বলা শুরু করেছে। তবে দলের শীর্ষ নেতারা, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের এই ধারণাকে মানতে নারাজ। তারা বলছেন, বড় দুই দলের বাইরে মানুষ তাদেরকে চায় বলেই তারা এককভাবে নির্বাচনের কথা বলছেন।
কিছুদিন আগে এরশাদ বলেন, ‘৩০০ আসনে নির্বাচন করবো। আমাদের প্রার্থী ঠিক করা হয়ে গেছে।’
সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের এমন মন্তব্য একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের আভাস দিচ্ছে রাজনীতি অঙ্গণে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে, জোটের বাইরে এসে নির্বাচন করবে এরশাদের জাতীয় পার্টি। রাজনীতির মাঠে এমন বাতাস থাকলেও, দলটির শীর্ষ পর্যায় তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন – এবার দুই দলের বাইরে গিয়ে মানুষ বেছে নেবে জাতীয় পার্টিকে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আজকে সময় এসেছে জাতীয় পার্টি আরেকটি পরীক্ষা দেবে জনগণের কাছে। সেই আস্থা নিয়েই আমরা ৩০০ আসনে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
জোটের ভেতরে থেকে নির্বাচন না করার চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত না হলেও, খুব শিগগিরই স্পষ্ট হবে তাদের জোটে থাকা কিংবা না থাকা- বলছেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা না থাকার বিষয়টি হলো আলোচনার বিষয়। জোটের বিষয় আমাদের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যাবে না। পরিস্থিতি বিবেচনা করবে কি করতে হবে। আমাদের চেয়ারম্যান সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন সময়য়ত।’
তবে, বিশ্লেষকরা জাতীয় পার্টির এমন অবস্থানের ব্যাখ্যায় বলছেন- দরকষাকষির হিসেবে শেষপর্যন্ত জোটে থাকাই শেষ নিয়তি হবে জাতীয় পার্টির জন্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এরশাদ সব সময় দর কষাকষির জায়গা থেকে কথাগুলো বলছেন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগকে কিছুটা চাপে রেখে যদি আরেকটু সুবিধা নেয়া যায়।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক শামসুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির মধ্যে একটা সুবিধাবাদী শ্রেণি আছে তারা চাইবেন আবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করে মন্ত্রী হতে। তারা বিরোধী দলে থাকলে একই ঘটনা ঘটবে। ‘
অন্যদিকে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার প্রশ্নে বিএনপির কোনো পথ খোলা নেই জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন- বি চৌধুরী ও ড. কামালের ‘জাতীয় ঐক্যই’ হতে পারে বিএনপির নতুন ভবিষ্যৎ। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ভোটের হিসেবে বিএনপি যদি জয়লাভ করার চিন্তা যদি করে থাকে তাহলে অবশ্যই নির্বাচনে যাবে।’ রাজনৈতিক বিশ্লেষক তারেক শামসুর রহমান বলেন, ‘এমনও হতে পারে বিএনপি চিন্তা করতে পারে ড. কামাল হোসেন বিরোধী দলের নেতা। অথবা বি চৌধুরী হচ্ছেন বিরোধী দলের নেতা। এমন হতে পারে। বিএনপিকে ছাড় দিতে হবে। এবং বিএনপির মহাসচিব এটা বলেছেন। চূড়ান্ত বিচারে বিএনপি নির্বাচনে যাবে।’
নির্বাচনকেন্দ্রিক এসব জোটের গঠন বা ভাঙ্গনের চূড়ান্ত রূপ দেখতে দেশবাসীকে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন