নীরবে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে এম আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল
প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও সাতক্ষীরায় নীরবে গড়ে উঠেছে ভালো কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত এ জেলায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সন্তানরা এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা লাভ করে দেশে ও বিদেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে খুব একটা প্রচার হয় না।
সেরকম একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মাধবকাটি গ্রামে।
শহরের অদূরে মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পরিচালিত আন্তর্জাতিক মানের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম এম আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল।
আমেরিকা প্রবাসী, বিশিষ্ট সমাজসেবক রোটারিয়ান মো. শফিকুজ্জামান নিজস্ব ভবনে গড়ে তুলেছেন এই স্কুলটি।
গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে রুপ দিতে ২০২২ সালে মো. শফিকুজ্জামান এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে স্থায়ীভাবে থাকার পরও নিজের গ্রামের মানুষের শিক্ষার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন।
স্কুলটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি অনাবাসিক ও আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বলে রাখা ভালো, এই স্কুলে স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া মিলছে, আবাসিক শিক্ষার্থীরা যে শুধু জেলার বাইরে দূর থেকে আসে তা নয়। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর ওই গ্রাম বা আশপাশের এলাকায় বাড়ি। কিন্তু তারাও আবাসিক হলরুমে থাকে।
এর কারণ হচ্ছে- শিক্ষার্থীরা সার্বক্ষণিক শিক্ষকদের তত্তাবধানে থাকে। যেখানে তাদের নিয়ম করে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থাও আছে। স্থানীয় মানুষের কাছেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রতি আছে বিশেষ ধরনের ভালোবাসা। জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে এই স্কুলের পড়ালেখা করানো হয় এবং সকল ক্লাসরুম মনিটরিংয়ের জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা ও সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। প্রবাসী পরিবারের সন্তানদের জন্য রয়েছে বিশেষ স্কলারশিপ। ফলে, প্রবাসী পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ার আদর্শ স্কুল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। যেখানে স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে থাকেন।
সাতক্ষীরা জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলটি সত্যিকার অর্থেই জ্ঞানের আলো বিতরণ ও অত্র অঞ্চলে শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী ভূমিকা রাখছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ জানান, শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও অভিভাবকদের সচেতনতার কারণেই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারছে। জবাবদিহিতা ও সচেতনতা বাড়াতে অভিভাবক সমাবেশের পাশাপাশি জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষা সফর, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসবের সিংহভাগই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শফিকুজ্জামানের নিজস্ব অর্থায়ণে আয়োজন করা হয় বলেও জানান তিনি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খলীল বলেন বলেন, বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি গর্বিত। আমি নিজেও কাজের ফাঁকে এসব শিশুদের পাঠদান দিতে পেরে বেশ ভাল লাগে। পাঠদানের পাশাপাশি তাদের সাথে মজার মজার গল্প করা হয়। আবার সবার সাথে খেলাধূলা করা হয়। এতে করে কাজের পর আমার অবসর সময়টুকু ভাল কাটে।
এম আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী, বিশিষ্ট সমাজসেবক রোটারিয়ান মো. শফিকুজ্জামান বলেন, আধুনিক ও সময়োপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরি করতে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছি। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সার্বক্ষণিক তদারকির ফলে নীরবে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে এম আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য সম্প্রতি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে।
প্রাইড ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর ও খবর সাতঘরিয়া পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, এম.আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল প্রাইড ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ‘গ্রাম হবে শহর’ বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী মো. শফিকুজ্জামানের আন্তরিক প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার সফল পেতে শুরু করেছে জেলাবাসী। আগামী দিনে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম আরো সম্মৃদ্ধ হবে এই প্রত্যাশা করছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন