নেত্রকোনার দুর্গাপুরে গ্রামীন রাস্তার কাজ বন্ধ বিপাকে জনগন

নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছে দুর্ভোগে। আটলা, নন্দেরছটি, ভাদুয়া ও মুন্সিপাড়া এই চার গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল যে গ্রামীণ সড়ক, সেটিই এখন চলাচলের অযোগ্য।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর থেকে মুন্সিপাড়া পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় এলজিইডি। গত ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় এর কাজ। এরপর ওই রাস্তার মাটি খোঁড়াখোড়ির কাজের পর গত দুই মাস আগে কাজ বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদার। এরপর থেকে রাস্তায় তৈরি হয়েছে পানি আর কাঁদা।

এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ শুরু এবং সমাপ্তের দাবিতে রবিবার (১৫ জুন) ভাদুয়া গ্রামে আয়োজন করা হয় মানববন্ধনের। শত-শত মানুষ এতে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা মুফতি হারুনুর রশীদ খান, জিয়াউর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হাকিম, মাদ্রাসা শিক্ষক মাহমুদ হাসান, ব্যবসায়ী আক্তারুজ্জামান দুলাল, কৃষক বাদল সরকার, অটো চালক হারুনুর রশীদ, মোটরসাইকেল চালক বিল্লাল মিয়া, স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ, শিক্ষার্থী তাবাসসুমসহ অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাস্তাটার কাজ যখন শুরু হয়, তখন মনে হয়েছিল আমাদের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়িই স্বস্তি পাব। এখন দেখি আগের চেয়েও বেশি কষ্ট। দ্রæত আমাদের এই রাস্তা চলাচলের উপযোগী চাই।

মানববন্ধনে মাহমুদ হাসান বলেন, বিদ্যালয়-মাদ্রাসায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে গেলে দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাস্তার কাজে কিছু সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে জেনেছি। আমরা বলতে চাই কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রæত সময়ের মধ্যে এই দুর্ভোগ থেকে আমাদের রক্ষা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

কৃষক বাদল সরকার ক্ষোভ ঝাড়েন এই বলে, আমাদের ধান বাজার নিতে পারছি না এই রাস্তার জন্য। ধান ঝানজাইল বাজারে নিলে ১২শ টাকা পাব কিন্তু এখানে ৮শ টাকা মণ। আমরা অনেক কষ্টে আছি।

শিক্ষার্থী তাবাসসুম জানায়, রোজ কাঁদা মাড়িয়ে স্কুলে যেতে হয়। জামা নষ্ট হয়, বই ভিজে যায়। আমাদের এই রাস্তাটা ভালো করে দিক সবাই।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী(এলজিইডি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, টেন্ডারের পর ঠিকাদার বক্সকার্টিংয়ের কাজ শুরু করে। কিন্তু কিছু কাজ করেই বালু সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়, ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো, ঠিকাদারকেও তাগিদ দেওয়া হবে যেন দ্রæত কাজ সম্পন্ন করে।