নেত্রকোনার দুর্গাপুরের ক্ষেতখামারে আদিবাসী নারীরা
ঘর—দুয়ার সামাল দিয়ে প্রতিবন্ধকাতা মাড়িয়ে ফসলের মাঠও সামলাচ্ছে আদিবাসী নারীরা, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে দেখাযায় এসব দৃশ্য।
তারা জীবিকার কথা চিন্তা করেই মাঠে কৃষি কাজের দায়িত্বও নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। ফসলি জমির বীজতলা তৈরি,সেচ কাজ পরিচর্যা,ধান মাড়াই কিংবা গোলায় ভরার কাজও করে থাকেন তারা। ফলে কৃষি কাজে দিন দিন বাড়ছে তাদের গুরুত্ব। তারাও কাজ করে তাদের সংসারের অভাব কাটিয়ে মুখে ফুটেছে আলোর ঝিলিক।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা সদর ইউনিয়নের বারোমারি গ্রামের আমনের মাঠে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
আদিবাসী নারী শ্রমিকরা জানান,একসময়ে পাহাড়ি শাক—সবজি, লতাপাতা বিক্রি করে অথবা অন্যের বাড়ি কাজ করে কোনো ভাবে চলতো সংসার। সারা বছর সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। তবে এখন তারা ফসলের মাঠ সামলিয়ে যেমন অভাব কাটিয়ে উঠছে পাশাপাশি সন্তানের পড়াশোনা করিয়ে ভালোভাবে জীবনযাপন করছে। যার কারণে সীমান্তের আদিবাসী নারীরা এখন কৃষি কাজেই ঝুঁকছে।
সদর ইউনিয়নের বারোমারী গ্রামের নমিতা হাজং। স্বামী, ৩ মেয়ে ও ৩ ছেলে নিয়ে তার সংসার। তিনি জানান, দু’বেলা দুমুঠো খাবারের জন্য কষ্ট করতে হয়েছে। বর্তমানে অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে যেমন ভালোভাবে জীবনযাপন করছে পাশাপাশি নিজেরও কিছু জমি হয়েছে অন্যদিকে সন্তানদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারছেন তিনি। এতেই সুখে শান্তিতে চলছে জীবন।
একই গ্রামের বর্নালী হাজং। তিনি জানান, আগে পাহাড়ি শাকপাতা তুলে বাজারে বিক্রি করতেন। বিক্রির অল্প টাকায় কষ্টে চলতো সংসার তবে এখন ফসলের মাঠে কাজ করে ভালোই চলছে তাদের জীবিকানির্বাহ।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সীমান্তবর্তী গ্রামের বেশির ভাগ নারীরাই কৃষি ফসলের মাঠে কাজ করেন। আমাদের পক্ষ থেকে আদিবাসী নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নারী শ্রমিকরা অন্যের জমিতে কাজ করার পাশাপাশি নিজেরাই দক্ষতার সঙ্গে ফসলচাষ করে সফল হচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ২শত ৪৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭০০ হেক্টর রোপন হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন